ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকাডুবি: নিহত ২২ জনের ৯ জনই শিশু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় লইসকা বিলে নৌকাডুবিতে নিহত ২২ জনের জনের মধ্যে নয় জনই শিশু। এছাড়া, এ ঘটনায় ১১ জন নারী ও দুজন পুরুষ নিহত হয়েছেন।
উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া আজ শনিবার দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারকে ২২ জনের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত নয় শিশু হলো-ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দাতিয়ারা এলাকার মোবারক মিয়ার মেয়ে তাসফিয়া মীম (১২), সদর উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের মুরাদ হোসেনের ছেলে তানভীর (৮), একই এলাকার চিলোকুট গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার কন্যা তাকুয়া (৮), নরসিংসার গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে সাজিম (৭), বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের গেরারগাঁও গ্রামের জজ মিয়ার মেয়ে মুন্নি (১০), আদমপুর গ্রামের পরিমল বিশ্বাসের মেয়ে পৃথিবা বিশ্বাস (২), বাদেহাড়িয়া গ্রামের কামাল মিয়ার কন্যা মায়িদা আক্তার (৬), ময়মনসিংহ সদরের রামগোপালপুর গ্রামের শাওন মিয়ার ছেলে সাজিদ (৩) এবং শনিবার সকালে উদ্ধার হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার উত্তর পৈরতলার হারিজ মিয়ার মেয়ে নাসরাহ (৩)।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে লইসকা বিলে একটি যাত্রীবোঝাই ইঞ্জিনচালিত নৌকার সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা দুটি বালুবোঝাই ভলগেটের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক যাত্রীবোঝাই ট্রলারটি ডুবে যায়।
এ সময় নৌকার ছাদে থাকা বেশিরভাগ পুরুষ যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন। কিন্তু, নৌকার ভেতরে থাকা নারী ও শিশুরা সাঁতরানোর সুযোগ না পেয়ে ডুবে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মধ্যরাতে উদ্ধার কাজ সাময়িক স্থগিত থাকার পর শনিবার সকাল আটটা ৩৫ মিনিটে আবার উদ্ধার কাজ শুরু করে নারায়ণগঞ্জের বিআইডব্লিউটিএর ডুবুরি দল।
পরে, দুপুর পৌনে ৩টার দিকে উদ্ধার অভিযান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নৌকাডুবির ঘটনায় আর কেউ নিখোঁজ নেই। তবে, কেউ যদি দাবি করেন তাদের স্বজন এখনো নিখোঁজ আছেন, সে ক্ষেত্রে আমরা আবারও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করব।’
নৌকাডুবির ঘটনায় চার স্বজন হারানো চম্পকনগর ইউনিয়নের গেরারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সেলিম মিয়া বাদী হয়ে বিজয়নগর থানায় সাত জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।