জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বড় ঝুঁকিতে নারী ও শিশু

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আমরা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। এর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় যে বাজেট বরাদ্দ করা হয়, তা বর্তমান আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় খুবই অপ্রতুল। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তা ছাড়া নারীর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বৈষম্যমূলক প্রভাব সামাজিক উন্নয়ন ও রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে খর্ব করে। কার্যকর জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা তৈরিতে অবশ্যই লৈঙ্গিক বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগী হতে হবে। জেন্ডারভিত্তিক বাজেট নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ধারণা আরো বাড়াতে হবে। জেন্ডার সংবেদনশীল জলবায়ু বাজেট নিয়ে গভীর জ্ঞান ও প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি। জলবায়ু অর্থায়ন বরাদ্দে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থাকতে হবে কেন্দ্রবিন্দুতে—এমন মত দেন বিজ্ঞজন। গতকাল মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন অন বাংলাদেশ ক্লাইমেট বাজেট (২০২১-২২)’ শীর্ষক ওয়েবিনারে তারা এসব কথা বলেন।

ওয়েবিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক ড. মিজান আর খান, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি ফেরদৌসি বেগম, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির। জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য ৮ শতাংশেরও কম বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে, যা ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মোট জাতীয় বাজেটের ৫৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ, অর্থাত্ ২৫,১২৪ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা। কিন্তু এর মধ্যে অপারেটিং বাজেটের অধীনে ১০,২৮৬ দশমিক ১৭ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন বাজেটের অধীনে ১৪,৮৩৮ দশমিক ৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত বছরের বরাদ্দের তুলনায় চলতি অর্থবছরের বাজেট ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ থেকে কমে ৭ দশমিক ২৬ শতাংশ হয়েছে। চলতি অর্থবছরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জন্য বাজেট বরাদ্দ হয় ৩৭৯ দশমিক ২১ কোটি টাকা, যা গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১৯ দশমিক ৮৩ কোটি টাকা কম। তা ছাড়া আগের বছরের তুলনায় বাজেটে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৪২৭ দশমিক ১৯ কোটি টাকা এবং মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ১১৩ দশমিক ৩২ কোটি টাকা কমেছে।

ড. মিজান আর খান বলেন, জলবায়ু অর্থায়নের ৮৫ শতাংশ বরাদ্দ আসে স্থানীয় খাত থেকে। তাই স্থানীয় খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে নিজেদের টাকা কীভাবে খরচ হচ্ছে, তা সচ্ছতা ও জবাবদিহির মধ্যে রাখতে হবে। দেশের জনমিতির লভ্যাংশকে কাজে লাগানোর জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার যুবসমাজকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধম্যে জনশক্তি রপ্তানি করা যেতে পারে বলে তিনি অভিমত দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Warning: Undefined array key 0 in /home/freevec2/bdchild24.com/wp-content/plugins/cardoza-facebook-like-box/cardoza_facebook_like_box.php on line 924