আজকের শিশু-কিশোররাই স্মার্ট বাংলাদেশ চালাবে: প্রধানমন্ত্রী

শিশু-কিশোরদের নিজেদের মধ্যে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের ছেলেমেয়েদের মাঝে এই উচ্চাকাঙ্ক্ষাই থাকবে, মানুষের মতো মানুষ হব। জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস মাদক থেকে দূরে থাকব এবং দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। আমরা আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে, এই আজকের শিশু-কিশোররাই স্মার্ট বাংলাদেশ চালাবে।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ উদযাপন ও শেখ রাসেল পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শিশুদের ভেতর সুপ্ত মেধা-মনন বিকশিত করা, তাদের ভেতরে মানুষের প্রতি ভালোবাসা, মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ, মানুষের প্রতি কর্তব্যবোধ গড়ে তোলা এবং সেইসঙ্গে ধনী হোক দরিদ্র হোক অথবা প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক অথবা যেই হোক; ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষই মানুষ। মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখা।

তিনি আরও বলেন, আমরা তো ছোটবেলা থেকেই শিখেছি অন্ধকে অন্ধ বলিও না পঙ্গুকে পঙ্গু বলিও না। বরং তাকে সাহায্য করো। তাই শিশু-কিশোরদের সেই মানসিকতা নিয়ে নিজেকে গড়ে তোলার আহ্বান জানাই। মানুষের জন্য মানুষ, সেই ভাবেই তোমরা নিজেদের গড়ে তুলবে।

বিশ্ব নেতাদের যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান পুর্নব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করেন। যুদ্ধ এবং অস্ত্র মানুষের মঙ্গল বয়ে আনে না। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় নারী ও শিশুরা আর যুবকরা দেয় জীবন। সন্তানহারা পিতা-মাতা, পিতা-মাতা হারা সন্তান তাদের যে কী বেদনা সেটা আমরা জানি।

শেখ হাসিনা বলেন, বরং এই অস্ত্র বানানো আর অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যে অর্থ ব্যয় হয়, সেই অর্থ সারা বিশ্বের শিশুদের খাদ্য, স্বাস্থ্য এবং তাদের উন্নয়নে ব্যয় করা হোক। সেটাই আমাদের দাবি। আমরা সেটাই চাই। আমরা শান্তি চাই। কারণ শান্তি উন্নতি দেয়। যুদ্ধ ধ্বংস সৃষ্টি করে। কাজেই ধ্বংস চাই না। আমরা উন্নতি চাই। শান্তি চাই। আমরা শান্তির পক্ষেই সবসময় কাজ করি।

ছোট ভাই শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করেন শেখ হাসিনা বলেন, আমার ছোট্ট রাসেল সোনার মতো আর যেন কাউকে এভাবে জীবন দিতে না হয়। একটা ফুল না ফুটতেই যেন ঝরে না যায় সেটাই আমার কামনা রইল।

কবি সুকান্তের কবিতা থেকে পাঠ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ/প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল/এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি/নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে গিয়ে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। আজকের এই শিশুরাই হবে সেই কাণ্ডারি, সেই সৈনিক। তারাই গড়ে তুলবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের উন্নতি চাই। দেশের মানুষকে আমরা সেভাবে গড়ে তুলতে চাই। আমি চাই আমাদের শিশুরা লেখাপড়া শিখবে। আজকে এখানে ছোট সোনামণিরা তোমরা আছো, তোমরা গুরুজনের কথা মেনে চলবে। বাবা মায়ের কথা মেনে চলবে। তোমরা লেখাপড়া শিখবে। একটা কথা মনে রাখবা, ধন-সম্পদ টাকা পয়সা কিছু থাকে না, কিন্তু বিদ্যাটা থাকে, শিক্ষাটা থাকে। শিক্ষাটা হচ্ছে মূল শক্তি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা নিজের ছেলেমেয়েদেরও সেভাবেই মানুষ করেছেন বলেও জানান।

তিনি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েদের সবসময় একটা কথা শিখিয়েছি, টাকা-পয়সার সম্পদ আমরা কিছু রেখে যেতে পারব না, কিন্তু তোমাদের লেখাপড়া শিখতে হবে এবং সত্যিকারভাবে বিশ্বের ভালো ভালো নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেছে। আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ বা অটিজম বাচ্চাদের জন্য সরকার নানা প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এসব প্রকল্পের সঙ্গে তারা কাজ করে যাচ্ছে পর্দার আড়ালে।

কিশোর-কিশোরীদের সাইবার অপরাধ রোধে ১৩২১৯ নম্বরের হেল্পলাইন সেবা, স্মার্ট ৩৩৩, স্মার্ট প্রেগনেন্সি মনিটরিং সিস্টেম এবং সমন্বিত ই-টোল কালেকশন সেবাসহ আরও মোট ১০টি ই-সেবা প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Warning: Undefined array key 0 in /home/freevec2/bdchild24.com/wp-content/plugins/cardoza-facebook-like-box/cardoza_facebook_like_box.php on line 924