৬০০০ পিপিই-মাস্ক-ক্যাপ দিল ৭ বছরের শিশু
মহামারি করোনাভাইরাসে দিশেহারা গোটা বিশ্ব। বিশ্বের ২০৪টি দেশ ও ২টি আন্তর্জাতিক অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। গৃহবন্দি করে ফেলেছে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষকে। এমন সময়ে যে যার সামর্থ মতো চেষ্টা করে যাচ্ছে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সাহায্য-সহযোগিতা করতে।
ব্যতিক্রম নয় ভার্জিনিয়া অসবার্গের ৭ বছর বয়সী শিশু যোহাইব বেগ। করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে তার স্কুল বন্ধ। তাইতো করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় যারা নিয়োজিত তাদের সাহায্য করার কথা মাথায় আসলো তার। সে লক্ষ্যে বাড়ির পাশের হোটেলের ম্যানেজারের কাছে গিয়ে চাইলেন ‘শাওয়ার ক্যাপ’। যেটা মাথায় দিয়ে মেডিকেল কর্মীরা কাজ করতে পারবে।
ওই হোটেল থেকে মিললো শাওয়ার ক্যাপ। এ ছাড়া আরো পাঁচটি হোটেল তাকে শাওয়ার ক্যাপ ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে সহায়তা করা হলো। সব মিলিয়ে মোট ৬ হাজার পিপিই, মাস্ক ও ক্যাপ সংগ্রহ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে তার বাসায় আসে আইনোভা ফেয়ারফ্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের হাতে পিপিই, মাস্ক ও ক্যাপ তুলে দেয়। এই পুরো কাজে তাকে সহায়তা করে মা ইসমা জুবায়ের।
আইনোভা হাসপাতালে দেওয়ার পেছনেও একটা ঘটনা রয়েছে। যোহাইবের বয়স যখন ৪ বছর ছিল, তখন টিউমারের সমস্যায় ভুগেছিল। ওই টিউমারের অস্ত্রোপচার হয়েছিল এই হাসপাতালে। কয়েকদিন থাকতেও হয়েছিল। হাসপাতালের হেমাটোলজিস্টের সঙ্গে তার ভালো ভাব হয়ে যায়। তাইতো করোনার এই কঠিন সময়ে তার জন্য মনটা হু হু করে উঠে। সিদ্ধান্ত নেয় তিনি ও অন্যান্য স্বাস্থকর্মীদের সহায়তা করার। যেমন ভাবা তেমন কাজ।
তবে ভার্জিনিয়ায় লকডাউন ঘোষণা করায় তারা এই কাজটি আর করতে পারছে না। তারপরও প্রতিদিন অনেক কল পাচ্ছে বিভিন্ন জিনিস তাদের দেওয়ার ব্যাপারে।
যোহাইবের এই মহৎ কাজের খবর আমেরিকার বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এসেছে। তেমনই একটি ভার্জিনিয়ার প্যাচ ডটকম। যোহাইবের এই মহৎ কাজ নিয়ে তাদের করা প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে শেয়ার করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
এতে যারপরনাই বিস্মিত হয়েছে যোহাইবের পরিবার। তার মা বলেছেন, ‘যোহাইবের হৃদয়টা খুবই কোমল। সে সব সময় অন্যের কথা ভাবে। তার এই কাজের নিউজটি বারাক ওবামা পর্যন্ত শেয়ার করেছেন। এটা আমাদের জন্য ছিল বিরাট সারপ্রাইজ। আমরা বেশ সম্মনিত যে তিনি যোহাইবের কথা উল্লেখ করেছেন। আশা করছি এটা অন্যান্যদেরও উৎসাহিত করবে। বুঝবে শেখাবে যে তুমি যতো ছোটই হও না কেন, পরিবর্তন আনতে পারো।’