শিশু অধিদফতর প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনায় অধিকার কর্মীদের প্রতিক্রিয়া
শিশু কল্যাণ নিশ্চিত করার বিষয় উল্লেখ করে এবারের বাজেট বক্তৃতায় শিশু অধিদফতর প্রতিষ্ঠার বিষয়ে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বাজেট ঘোষণায় তিনি বলেন, ‘শিশু কল্যাণ নিশ্চিত করতে শিশু অধিদফতর প্রতিষ্ঠা, সকল জেলায় শিশু কমপ্লেক্স নির্মাণ, সকল উপজেলায় শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
সেভ দ্য চিলড্রেন এর শিশু সুরক্ষা ও শিশু অধিকারে সুশাসন সেক্টরের পরিচালক আবদুল্লা আল মামুন এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শিশুদের জন্য পৃথক বিভাগ গঠনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘ শিশু অধিকার কমিটি, সেভ দ্য চিলড্রেনসহ শিশু অধিকার সংগঠনগুলো সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছিল। বিষয়টি বাস্তবায়নের পরিকল্পনার ঘোষণায় সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আশাকরছি, আগামী অর্থ বছরের মধ্যেই একটি কার্যকর শিশু বিভাগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ও বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত শিশু অধিকার ও উন্নয়ন বিষয়ক সকল কার্যক্রমের সমন্বয় দেখা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে শিশুদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগটিও কর্মজীবী মায়েদের সন্তানদের সুরক্ষা ও বিকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আশাকরি। ডে কেয়ার পরিচালনার ক্ষেত্রে শিশুদের সর্বোত্তম স্বার্থ নিশ্চিত করে গুণগত মান ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। এই ক্ষেত্রে বেসরকারি সংগঠনগুলোর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে সরকার কাজে লাগাতে পারে। এর পাশাপাশি প্রত্যাশা করবো এবারের বাজেটে, কোভিড-১৯ এর কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শিশুরা যেনও সকল ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন থেকে সুরক্ষিত থাকে, স্কুল থেকে ঝরে না পড়ে, শিশু শ্রমে যুক্ত না হয়, বাল্যবিয়ের শিকার না হয় এই বিষয়গুলো মাথায় রাখবে। এছাড়া সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিশেষ সামাজিক নিরাপত্তার আর্থিক পরিকল্পনা করবে।’
এদিকে একইসঙ্গে নারীর ক্ষমতায়ন অংশে বড় ধরনের কোনও সুখবর নেই। বাজেট বক্তৃতায় নারীর ক্ষমতায়নের অংশে সরকার কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে মহিলাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে চলমান উদ্যোগগুলোর বিষয়ে বলা হয়। সেখানে বলা হয়, তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন ঘটাতে সুবিধা বঞ্চিত নারীদের তথ্য প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য ‘তথ্য আপা’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। এছাড়া, গ্রামীণ দুস্থ ও অসহায় মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদান কার্যক্রমকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শক্তিশালী করা হয়েছে।
নারী অধিকারকর্মী খুশী কবীর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করোনাকালে নারীদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সহায়তা ও দিকনির্দেশনা থাকা জরুরি। নিয়মিত যে কাজগুলো করা হয় সেটা যেমন থাকবে, তেমনি করোনার মতো বিশেষ পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়তি প্রণোদনাও দরকার।’