শিশুর কানপাকা যেভাবে বুঝবেন

কানের রোগের মধ্যে কানপাকা রোগটি বেশি পরিলক্ষিত হয়। এ রোগটি সাধারণত শিশু বয়সেই বেশি দেখা যায়। কেননা, এ বয়সে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই সহজেই মধ্যকর্ণ সংক্রমিত হয়। তবে শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে। কানপাকা রোগকে অনেকে তেমন গুরুত্ব দেয় না। এতে মারাত্মক সংক্রমণ হতে পারে। তাই এ রোগ নিয়ে কখনও অবহেলা করা উচিত নয়।

শিশুর কেন কান পাকে

শিশুকে খাওয়ানোর পদ্ধতি সঠিক না হলে অনেক সময় এ রকম বিপত্তি ঘটে। যেমন অনেকেই শিশুকে চিত করে শুইয়ে খাবার দিয়ে থাকেন। এটি ঠিক নয়। এ কারণে অনেক সময় কানপাকার মতো সমস্যা হতে পারে। আবার যেসব শিশুর শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ হয়, অর্থাৎ যাদের প্রায়ই সর্দি-কাশি, গলাব্যথা বা এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে, তাদের কানপাকার আশঙ্কা বেশি। অ্যাডেনয়েডের সমস্যা বা টনসিলের অস্ত্রোপচার হয়ে থাকলে কান পাকতে পারে।

যেভাবে বুঝবেন

কানে ব্যথা বা ভারী অনুভব হওয়া কানপাকার প্রধান লক্ষণ। কিছুদিন কানে ব্যথা বা অস্বস্তি হওয়ার পর হঠাৎ কান থেকে পুঁজ বা অন্য কোনো ধরনের তরল বের হয়ে আসতে পারে। ছোট শিশুরা ব্যথায় কান্নাকাটি করতে থাকে।

প্রতিকার ও প্রতিরোধ

শিশুর কান থেকে যদি কোনো তরল পদার্থ বেরিয়ে আসে, তাহলে তার কান পরিস্কার করে দিতে হবে। তবে কান পরিস্কার করতে গিয়ে কানে খোঁচাখুঁচি করা যাবে না। এতে শিশু কানে আঘাত পেতে পারে। কানে ব্যথা থাকলে ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে। শিশুকে কানে ব্যবহার করার ওষুধ দিতে হতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ শিশুর কানে দেবেন না। শিশুর কান পাকলে গোসলের সময় তার কানে অবশ্যই তুলা গুঁজে দেবেন, যাতে কানে কোনোভাবেই পানি না ঢোকে। অন্য কোনোভাবে শিশুর কানে যেন পানি না ঢোকে, তাও নিশ্চিত করতে হবে।

সুস্থ শিশুকেও চিত করে শুইয়ে খাবার খাওয়ানো যাবে না। এমনকি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ও মাথার দিকটা সামান্য উঁচু করে ধরে রাখা উচিত।

হতে পারে জটিলতা

কানপাকা একটি সাধারণ রোগ। তবে দীর্ঘদিন ধরে যদি এ রোগে শিশু ভুগতে থাকে এবং যদি তার চিকিৎসা না করানো হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে শিশু বধির হয়ে যেতে পারে। তবে কান পাকলেই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ ধরনের জটিলতা হয় না। কিছু শিশুর একবার কানপাকা ভালো হয়ে গেলেও বারবার কান পাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ইএনটি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

[সহযোগী অধ্যাপক, নাক কান গলা বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *