শিশুর অতিরিক্ত প্রস্রাব

শিশুদের মাত্রাতিরিক্ত প্রস্রাব করার পেছনে নানা সমস্যা থাকতে পারে। প্রথম কথা হলো, তার পানির পিপাসা এবং পানি পানের পরিমাণ কেমন, সেটা জানা দরকার।

এক বছর বয়সে শিশুর দৈনিক স্বাভাবিক প্রস্রাবের পরিমাণ ৫০০ মিলি। ৭–৮ বছর বয়সে ১ লিটার ও ১৫ বছর বয়সে ১.৫ লিটার।

সাধারণত সূত্র অনুযায়ী, স্কুলে যাওয়ার আগের বয়সে একটি শিশু দিনে ১ লিটার ও স্কুল বয়সের শিশুটি দিনে ২ লিটারের বেশি প্রস্রাব করলে সে বেশি প্রস্রাবজনিত সমস্যায় ভুগছে কি না, খতিয়ে দেখা যায়।

শিশুদের মাত্রাতিরিক্ত বাথরুমে যাওয়া ও প্রস্রাব করার পেছনে নানা সমস্যা থাকতে পারে। প্রথম কথা হলো, তার পানির পিপাসা এবং পানি পানের পরিমাণ কেমন, সেটা জানা দরকার।

শিশু বেশি পরিমাণে পানি পান করার কারণে বেশি প্রস্রাব হবেই। এটি শিশুর এক ধরনের আচরণজনিত সমস্যা হতে পা‌রে, যাকে সাইকোজেনিক বলা হয়। আবার পিপাসা নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র মস্তিষ্কের হাইপোথেলামাসে বা এর আশপাশে কোনো টিউমার, আঘাত, সংক্রমণ প্রভৃতি কারণেও হতে পারে।

• শিশুদের ডায়াবেটিস হয় না, তা নয়। সাধারণত শিশুদের যে ডায়াবেটিস হয় তাকে বলা হয় টাইপ ১ ডায়াবেটিস মেলিটাস। এতে শিশুর মাত্রাতিরিক্ত প্রস্রাব হতে থাকে, দ্রুত ওজন কমতে থাকে, আর শিশু বারবার পানি পান করে। খুব দ্রুত শিশুর স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে একসময় অচেতন হয়ে পড়তে পারে। এ ছাড়া কিডনির দীর্ঘমেয়াদি রোগ বা ক্রনিক রেনাল ফেলিওরেও অতিরিক্ত প্রস্রাব হতে পারে।

শিশুদের মাত্রাতিরিক্ত প্রস্রাব করার পেছনে নানা সমস্যা থাকতে পারে
প্রথম কথা হলো, তার পানির পিপাসা এবং পানি পানের পরিমাণ কেমন, সেটা জানা দরকার

• প্রস্রাবের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণকারী এডিএইচ হরমোনের নিঃসরণে সমস্যা বা কার্যকারিতায় সমস্যা দেখা দিলে রোগটিকে বলা হয় ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস। মেনিনজাইটিস, এনকেফালাইটিস প্রভৃতি মস্তিষ্কের তীব্র সংক্রমণজনিত অসুখের প্রক্রিয়াজনিত জটিলতায় ওই হরমোন উৎস নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

• বংশগত বা জেনেটিক কিছু রোগে কিডনি অকার্যকর হতে পারে, আবার হতে পারে নেফ্রোজেনিক ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস। রক্তে ক্যালসিয়াম উচ্চমান বা পটাশিয়াম ঘাটতি একই পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

• কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বেশি প্রস্রাব হয়। যেমন থিওফাইলিন, ডাইইউরেটিকস। 

কী করবেন

শীতল আবহাওয়ায়, বৃষ্টির দিনে শিশু বারবার বাথরুমে যেতে পা‌রে। বারবার ডায়াপার পরিবর্তন করতে হতে পারে। এটি স্বাভাবিক। কিন্তু যদি দিনে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি প্রস্রাব হতে থাকে, বা এর সঙ্গে শিশুর ওজন হ্রাস, পানিশূন্যতা বা অন্য কোনো উপসর্গ থাকে, তবে সতর্ক হতে হবে।

লেখক: সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Warning: Undefined array key 0 in /home/freevec2/bdchild24.com/wp-content/plugins/cardoza-facebook-like-box/cardoza_facebook_like_box.php on line 924