মিয়ানমারে জান্তা শাসনে নিহত ৭৫ শিশু
মিয়ানমারের অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে অর্ধশতাধিক শিশু নিহত হয়েছে। তা ছাড়া নির্বিচারে কয়েক শ শিশুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটি দাবি করছে, মিয়ানমারে শিশু নিপীড়নের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পেয়েছে তারা। তথ্য অনুসারে, মিয়ানমারের গত পাঁচ মাসে ৭৫ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে এবং এক হাজার শিশুকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান মিকিকো ওটানি এক বিবৃতিতে জানান, সেনা অভ্যুত্থানের কারণে মিয়ানমারের শিশুরা অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে। তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পরপরই দেশে গণ-আন্দোলন শুরু হয়। সেনাবাহিনীও বসে নেই। আন্দোলনকারীদের দমনে তারা চালাচ্ছে নির্মম অত্যাচার। জান্তা সেই দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছে শিশুরাও। সেনা সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের পাশাপাশি শিশুদের ওপরও নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে। এর সঙ্গে চলছে ধরপাকড়। তা ছাড়া শিশুদের সামনেই হত্যা করা হচ্ছে তাদের মা-বাবা, ভাই-বোনদের। জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটিতে ১৮ জন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তাঁরা কনভেনশনে উল্লিখিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্বের সব জায়গায় শিশুর অধিকার রক্ষা হচ্ছে কি না, তাঁরা সেটা পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। ১৯৯১ সালে এ কনভেনশনটিতে মিয়ানমারও স্বাক্ষর করে। কমিটির বিশেষজ্ঞরা মিয়ানমারে এ শিশু হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁরা এর জন্য দায়ী করেছেন মিয়ানমার জান্তা ও পুলিশকে। তাঁরা বিশেষভাবে সেই ভুক্তভোগীদের কথা বলেছেন, যাদের নিজ ঘরেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিবৃতিতে এক ছয় বছর বয়সী মেয়েশিশুর কথাও উল্লেখ করেছেন তাঁরা। শিশুটি মান্দালায়ের অধিবাসী ছিল। তাকে পেটে গুলি করে হত্যা করে মিয়ানমার পুলিশ। এ ছাড়া মিয়ানমারের থানায়, কারাগারে এবং সেনাবাহিনীর কারাগারে অসংখ্য শিশু আটক রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। তাঁরা দাবি করছেন, অনেক শিশুকে জিম্মি করে তাদের মা-বাবাকে আটক করা হয়েছে। সূত্র : এএফপি।