‘মহামারী বাড়াতে পারে শিশুশ্রম’
শিশুশ্রম নিরসনে যে অগ্রগতি এসেছে, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে তাতে হোঁচট খাওয়ার আশঙ্কা এসেছে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে আইএলওর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সৈয়দা মুনিরা সুলতানা বলেন, “আমাদের আশঙ্কা, কোভিডের কারণে মানুষের আয়-রোজগার কমে যাওয়ার ফলে শ্রমবাজারে শিশুর সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে।”
তিনি জানান, বর্তমানে বিশ্বে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ১৫২ মিলিয়ন। আর এশিয়া প্যাসফিক অঞ্চলে এ সংখ্যা ৬২ মিলিয়ন।
“আমরা শিশুশ্রম নিরসনে যতটুকু সাফল্য অর্জন করেছিলাম কোভিড-১৯ এর আগে, কোনো অবস্থাতেই যাতে সেখান থেকে পিছিয়ে না পড়ি; সেজন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বয় রেখে আমাদের কাজ করতে হবে।”
হালনাগাদ তথ্য-উপাত্তের অভাব থাকায় এখনও ২০১৩ সালের শিশুশ্রম জরিপের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আবদুছ সহিদ মাহমুদ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করে তিনি বলেন, “আনুষ্ঠানিক সেক্টরের কারখানায় শিশুশ্রম তেমন একটা নাই, কিন্তু অনানুষ্ঠানিক খাতের শিল্পকারখানায় বিপুল সংখ্যক শিশু কাজ করে।
“টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এসব অনানুষ্ঠানিক খাতের শিল্প কারখানায় কর্মরত লাখ লাখ শিশুর ব্যপারেও আমাদেরকে ভাবতে হবে। তাদের শ্রম থেকে সরিয়ে আনতে হবে।”
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পর আরও বড় প্রকল্পের মাধ্যমে ঝঁকিপূর্ণ কাজ থেকে সব শিশুকে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা ছিল বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।
“প্রকল্পটি সরকারের তত্ত্বাবধানে এনজিওদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। কিন্তু দুই বছর হয়ে গেলেও এনজিও বাছাই করাই সম্ভব হয়নি। এটা হতাশাজনক।”
গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের অনেকেই অমানবিক পরিবেশে কাজ করে মন্তব্য করে সাবেক এই শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এসব শিশুদের মৌলিক চাহিদাও নিয়োগকর্তারা পূরণ করেন না অনেকক্ষেত্রে। এদের ব্যাপারেও আমাদের ভাবতে হবে, তাদের সুরক্ষায় কাজ করতে হবে।
“গৃহকর্মে নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য ২০১৫ সালে একটি জাতীয় নীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল। এখন সময়েরই দাবি তাদের জন্য একটি আইনী সুরক্ষার ব্যবস্থা করা। তাদের জন্য পৃথক আইন প্রণয়ন করা দরকার।”