ফুলকুঁড়ি আসরের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
গত ১৫অক্টোবর, শুক্রবার জাতীয় শিশুকিশোর সংগঠন ফুলকুঁড়ি আসর জাঁকজমকভাবে ঢাকায় ৪৭তমপ্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করেছে। সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হলেও ভোর ৬.৩০টা হতেই অনুষ্ঠানস্থল উৎসবমুখর হতে শুরু করে। প্রায় সহস্রাধিক শিশুকিশোর ও অভিভাবকের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্তভাবে অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশের শাখা পর্যায়ের পরিচালক, সহকারী পরিচালক, অভিভাবক ও শিশুরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। ফুলকুঁড়ি আসর তাদের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে অনেকগুলো প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে সকল প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আগস্ট মাসের শুরু হতে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনলাইনের মাধ্যমে সংগঠনটি চিত্রাঙ্কন, টাইপোগ্রাফি, গল্প বলা, বিজ্ঞান ভিডিও তৈরি, রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। এছাড়াও শাখা পর্যায়ে টেনটিসি ও ৬ষ্ঠ জাতীয় শর্টফিল্ম উৎসব এবং শাখার সংগঠকদের জন্য গান, অভিনয়, আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রতিযোগিতায় সারাদেশ থেকে অসংখ্য প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ, থিম সং প্রদর্শন, গান, নাটিকা, শর্টফিল্ম প্রদর্শনসহ চমৎকার কর্মসূচি ছিল। বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী শিশু ফুলকুঁড়িদের কয়েক ধাপে পরীক্ষা গ্রহণের পর ফুলকুঁড়ি আসরের সর্বোচ্চ পদক অগ্রপথিক ব্যাজ অনুষ্ঠানে পরিধান করিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে শিশুরা ‘‘দ্যা সিক্রেট সেভেন’’ নাটক মঞ্চায়ন করে।
জাতীয় শিশুকিশোর সংগঠন ফুলকুঁড়ি আসরের সভাপতি, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো: আব্দুল মতিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীন। ফুলকুঁড়ি আসরের প্রধান পরিচালক এ্যাডভোকেট অলী ইব্রাহিমের পরিচালনায় এবং সহকারী প্রধান পরিচালক আবরারুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন যে, বর্তমান সময়ে আমরা সুন্দর মানুষ হিসেবে নিজেরা জীবনযাপন করলেই চলবে না। সমাজের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা অনুভব করতে হবে। আগামীর সুন্দর পৃথিবীর জন্য অবশ্যই শিশুদের সঠিক পরিচর্যা করতে হবে।
বিশেষ অতিথি বলেন যে, বর্তমান সময়ে শিশুদের শুধু গদবাধা গণ্ডিতে আবদ্ধ করে রাখলে চলবে না বরং শিশুদের প্রতিভা বিকাশের জন্য তাদের চাপ মুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠার জন্য কাজ করতে হবে। তিনি শিশুদের সৃজনশীল বিকাশে ফুলকুঁড়ি আসরের বহুমুখী কাজের প্রশংসা করেন।
ফুলকুঁড়ি আসরের প্রধান পরিচালকের কাছে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন যে, করোনা পরিস্থিতির জন্য শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও আমরা শিশুদের মেধা ও মননশীলতা বিকাশের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিশু সংগঠন হিসেবে ফুলকুঁড়ি আসর সক্রিয়ভাবে ৪৭ বছর অতিবাহিত করেছে। আমরা আমাদের নিয়মিত কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুদের স্থবিরতা কাটিয়ে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টির প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি। সংগঠনের দীর্ঘ পথচলায় সকল সহযোগীদের প্রতি তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন যে, শিশুদের সত্যবাদী করে গড়ে তোলার জন্য অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। শিশু মনস্তত্ত্ব বুঝে শিশুদের প্রতিপালন করতে হবে। শিশুদের উপর কোন কিছু না চাপিয়ে দিয়ে বরং তাদের সহজাত কাজের ভুলগুলো ধরিয়ে দিতে হবে।