পাঁচতলা থেকে দুই শিশুকে ছুঁড়ে ফেলে দিল প্রতিবেশী
কলকাতার বড়বাজার এলাকায় প্রতিবেশীর সঙ্গে শত্রুতার জেরে পাঁচতলা থেকে দুই বছরের এক শিশু ও ছয় বছরের এক শিশুকে পাঁচতলা থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তৃতীয় একটি শিশুকেও ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন অভিযুক্ত। কিন্তু কোনোভাবে রেলিংয়ে আটকে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যায় সে।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার মধ্য কলকাতার বড়বাজার থানা এলাকায়। পুলিশ জানায়, বছর দুই বছরের শিশু শিভম সাউয়ের মৃত্যু হয়েছে। বিশাল সাউ নামে আরেকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রধান অভিযুক্ত শিবকুমার গুপ্তকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ১৫ দিন আগে শিবকুমার গুপ্তের সঙ্গে মৃত শিশুর বাবার দ্বন্দ্ব হয়েছিল। সেই দ্বন্দ্বের জেরেই ওইদিন বিকেলে শিভম ও বিশালকে বারান্দা থেকে নিচে ফেলে দেন শিবকুমার।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পাঁচতলায় একাধিক পরিবার বসবাস করেন। ঘটনার দিন বিকেলে কয়েকজন শিশু খেলছিল ওই বহুতলের বারান্দায়। তা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই সময় শিবকুমার হঠাৎই শিভম ও বিশালকে রেলিংয়ের ওপর দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অন্য প্রতিবেশীরা বাধা দেওয়ার আগেই নিচে পড়ে যায় শিভম ও বিশাল। তৃতীয় শিশুকে শিবকুমার ধাক্কা মেরে ফেলতে গেলে বাকিরা আটকে দেন। বারান্দার রেলিং ধরে কোনোমতে প্রাণে বেঁচে যায় শিশুটি। এ সময় গুরুতর জখম হয় শিভম ও বিশাল। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা শিভমকে মৃত ঘোষণা করেন। বিশালের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ জানিয়েছে, বিশাল এবং শিভম সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। বিশালের মায়ের নাম রেখা দেবী। শিভমের মা সবিতা দেবী। রেখা দেবীর অভিযোগ, শিব কুমার গুপ্ত কারো সঙ্গেই মেলামেশা করতেন না। প্রতিবেশীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। প্রায়ই প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত।
অন্যদিকে, প্রতিবেশীদের অভিযোগ, নিজের স্ত্রীর সঙ্গেও অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করতেন শিবকুমার। কয়েক বছর আগে তাঁর স্ত্রী পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে দাবি প্রতিবেশীদের। সেই ঘটনার পর থেকে ঘরবন্দি হয়েই থাকতেন শিবকুমার।
বড়বাজার থানার পুলিশ এবং কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা শিবকুমারকে জেরা করছেন। তারা জানার চেষ্টা করছেন কেন এ ধরনের অপরাধ করলেন শিবকুমার।