ছুটি বাড়লে ঢাবি যাবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে
করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে ছুটি বাড়লে সাময়িকভাবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। সোমবার (২০ এপ্রিল) উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ভার্চুয়াল বৈঠকটি প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে করোনাভাইরাস উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম যেন ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সোমবার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১টায় ভিসির বাসভবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের সঙ্গে অনলাইন ভার্চুয়াল মিটিং করেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এ বৈঠকে সংযুক্ত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত ডিনরা জানান, গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করা যায়, তাহলে শিক্ষকরা সংশ্লিষ্ট সেমিস্টার/বার্ষিক পদ্ধতির কোর্সগুলোর অতিরিক্ত ক্লাস ও ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে। তবে উদ্ভূত পরস্থিতিতে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসগুলো দীর্ঘ সময় বন্ধ রাখার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সাময়িকভাবে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সেই সম্ভাব্যতাকে মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত বিষয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিচিত করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। এ বিষয়ে ডিনরা নিজ নিজ অনুষদের বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের সম্ভাব্যতা যাচাই করবেন এবং প্রযুক্তগত সুবিধাদির মধ্যে প্রবেশাধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করার পরে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
পরীক্ষার ফলাফল সংক্রান্ত যেসব কাজ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস, সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের পরীক্ষা কমটি সমন্বয় করে চূড়ান্ত করতে পারে, সেই কাজগুলো এই বন্ধের সময়ে সমাপ্ত করার জন্য বৈঠকে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়। এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস সব সহায়তা দেবে।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও অনুষদ অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে, তাদের উদ্যোগের প্রশংসা করা হয় এই বৈঠকে। একইভাবে এই বৈঠক থেকে অন্যান্য বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও অনুষদকেও তাদের অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নিতে বলা হয়। এবিষয়ে নিজ নিজ বিভাগীয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সহায়তা নিতে পারে বলে সভায় উল্লেখ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ মোকাবিলায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রস্তুত, টেলিমিডিসিন সেবা প্রদান, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত পরামর্শ কার্যক্রম, টেস্টিং কিট উদ্ভাবন ও টেস্টিং সেবা প্রদানের সদিচ্ছা প্রকাশ, ল্যাব পরিচালনার প্রশিক্ষণ ও পরার্মশ প্রদান প্রভৃতি যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তার প্রশংসা করা হয় বৈঠকে। বৈঠকে খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দেশের মানুষকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটকে পদক্ষপে নিতে অনুরোধ জানানো হয়।
সভায় করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এবং বাংলাদেশের সমাজ, অর্থনীতি, উন্নয়ন, পরিবেশ, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে প্রভাব পড়বে, সেসব বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের সুচিন্তিত মতামত নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বৈঠকে।