করোনার এই সময়ে শিশুকে নিরাপদ রাখার উপায়
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের সব স্কুল–কলেজ ছুটি দেওয়া হয়েছে। শিশুরা বাড়িতেই সময় কাটাচ্ছে। এই সময়ে শিশুরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে, বিরক্তিবোধও হতে পারে। কেউ কেউ হতে পারে আতঙ্কগ্রস্ত। কাজেই শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে, তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বাড়িতে রাখুন: শিশুদের ঝুঁকিমুক্ত রাখতেই স্কুল বন্ধ করা হয়েছে। কাজেই আপনার সন্তানকে বাইরে যেতে না দিয়ে বাড়িতেই রাখুন। মার্কেট, রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল, আত্মীয়ের বাড়ি বা দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময় এটা নয়। তাতে ঝুঁকি বাড়বে। কোচিং কিংবা নাচ–গান বা সাঁতারের ক্লাসও বন্ধ রাখতে হবে। ঘরে সীমিতভাবে শিশুদের খেলার বন্দোবস্ত করতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
শিক্ষা দিন: সন্তানকে শেখান, করোনা কীভাবে ছড়ায়, এর প্রতিরোধের উপায় কী। সাবান–পানি দিয়ে হাত ধোয়ার নিয়ম দেখিয়ে দিন। হাত দিয়ে নাক–মুখ–চোখ স্পর্শ না করা, হাঁচি–কাশি এলে টিস্যু দিয়ে নাক–মুখ ঢাকা এবং তারপর টিস্যু যথাস্থানে ফেলা, টিস্যু না থাকলে হাতের কনুইয়ের ভাঁজে হাঁচি–কাশি দেওয়ার কৌশল শেখান।
শিশুদের বিরক্তিবোধ কাটাতে তাদের সঙ্গে সময় কাটান। ঘরে সীমিতভাবে শিশুদের খেলার বন্দোবস্ত করতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
আশ্বস্ত করুন: এ সময় পত্রপত্রিকায়, টেলিভিশনে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত নানা সংবাদ শিশুরা ভীত–উদ্বিগ্ন হয়ে উঠতে পারে। তাদের আশ্বস্ত করুন। বলুন, দেশে এই সংক্রমণ হচ্ছে বলে যে সবারই হবে, তা নয়। সংক্রমিত বেশির ভাগ রোগীই যে সেরে ওঠে, তা জানান।
হাইজিন রক্ষা করুন: বাড়িতে বসে থাকলেই যে শিশু নিরাপদ, তা নয়। কেননা বাড়িতে প্রায়ই বাইরের লোক, গৃহকর্মীর যাতায়াত আছে। মা–বাবা নিজেরাও বাইরে কাজে যান। কাজেই বাইরে থেকে যে–ই আসুক, প্রথমে ভালো করে হাত ধুয়ে, বাইরের জামা–কাপড় বদলে তারপর শিশুর কাছে যাবেন। বাইরে থেকে আনা যেকোনো জিনিস স্পর্শ করলে হাত ধুতে হবে। বাড়ির মেঝে, দরজার হাতল, টেবিল, সুইচ ইত্যাদি যেসব বস্তু অনেকে স্পর্শ করে, সেগুলো বারবার সাধারণ ডিটারজেন্ট ও পানি দিয়ে পরিষ্কার রাখুন।
ভালো কাজে ব্যস্ত রাখুন: শিশুদের বিরক্তিবোধ কাটাতে তাদের সঙ্গে সময় কাটান। ঘরেই খেলায় মেতে উঠতে পারেন। সন্তানকে বই পড়তে ও গান শুনতে উৎসাহিত করুন। কিছু একটা লিখতে দিন বা কোনো সৃষ্টিশীল কাজে ব্যস্ত রাখুন। সারা দিন টিভি দেখে বা গেম খেলে সময় কাটানো যাবে না।
সতর্ক থাকুন: বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলে, জ্বর–কাশি–শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত তাকে আলাদা করুন। শিশুকে কাছে যেতে দেবেন না। বিদেশফেরত কাউকে দেখতে যাওয়ার দরকার নেই। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে বা চিকিৎসকের কাছে নেওয়া থেকেও বিরত থাকুন।