আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে একে একে উদ্ধার তিন শিশুর লাশ
মারা যাওয়া তিন শিশুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ওই এলাকায় বৃষ্টি নেমেছিল। এর মধ্যেই ওই তিন শিশু বাড়ির কাছাকাছি স্থানে একসঙ্গে খেলছিল। এক ফাঁকে তাঁরা কাউকে কিছু না জানিয়ে নদে গোসল করতে চলে যায়। এরপর বিকেল গড়িয়ে গেলেও তারা বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। তখন থেকেই তাদের নিখোঁজ ভেবে তাঁরা নানা স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। আশপাশের পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িঘরে খোঁজ করেও কোথাও তাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।
আড়িয়াল খাঁ নদের যে অংশে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে, তিন শিশুর বাড়ি থেকে এর দূরত্ব প্রায় আধা কিলোমিটার। ওই তিন শিশু দুপুরের বৃষ্টির মধ্যে নদের ওই অংশে গোসল করতে গিয়েছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, সন্ধ্যার আগমুহূর্তে নদের পাড় ধরে চলা স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি নদের পানিতে এক শিশুর লাশ ভেসে থাকতে দেখেন। পরে তাঁদের মাধ্যমে খবর পেয়ে স্থানীয় ও আশপাশের লোকজন সেখানে এসে পানিতে নামেন। এ সময় একে একে দুই শিশুর লাশ তীরে তুলে আনেন তাঁরা। খবর পেয়ে তিন শিশুর পরিবারের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে আসেন। চাঁদের আলো ও কয়েকটি টর্চলাইটের সাহায্যে নিখোঁজ আরেক শিশুকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যান তাঁরা। পরে ব্যাপক খোঁজাখুঁজির পর রাত সাড়ে নয়টার দিকে আরেক শিশুর লাশ নদের পানিতে ভেসে উঠলে তাকেও তীরে তুলে আনা হয়। এরই মধ্যে খবর পেয়ে বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তিন শিশুর লাশ উদ্ধার করে।
বিন্নাবাইদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাজিয়া সুলতানা বলেন, এমন ফুটফুটে বাচ্চা তিনটির নদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনাটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। নদের পানিতে এখন তেমন স্রোত না থাকলেও মাঝখানের গভীরতা প্রায় ১০ ফুটের মতো হবে। হয়তো ওই তিন শিশু গোসলে নেমে নদের মাঝখানে যাওয়ার পর আর ফিরে আসতে পারেনি। সেখানে ডুবেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
ওসি তানভীর আহমেদ বলেন, ‘খবর পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। কিন্তু সেখানে যাওয়ার আগেই মারা যাওয়া তিন শিশুর লাশ নদ থেকে তীরে তুলে আনেন স্থানীয় লোকজন। কোনো অভিযোগ না থাকায় তিন শিশুর অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবারের সদস্যদের কাছে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।’