‘আর কোনো শিশুকে যেন রাসেলের ভাগ্যবরণ করতে না হয়
এদেশে যেন ’৭৫ এর মতো হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের পুনরাবৃত্তি না ঘটে এবং আর কোন শিশুকে যেন রাসেলের ভাগ্যবরণ করতে না হয় সে ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকালে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র এবং ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট পরিবারের অন্যদের সঙ্গে শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে আর কোন দিন যাতে হত্যা, ক্যু এবং ষড়যন্ত্র না হয়। ঘাতকের বুলেটে আর কোন শিশুকে যাতে এভাবে জীবন দিতে না হয় এবং দেশের অগ্রগতি যাতে থেমে না যায় সে ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটাই আহ্বান জানাবো, এই শিশুদের নিরাপত্তা দেয়া, ভালবাসা দেওয়া, সুন্দরভাবে গড়ে তোলা, তাদের জীবনকে সার্থক এবং অর্থবহ করা-এই কর্তব্য পালনই যেন সকলের আদর্শ হয়।
শেখ রাসেলের নির্মম হত্যাকাণ্ড স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের আর কোনো শিশুর জীবনে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে। তাদের জীবন যাতে সুন্দর হয়। কারণ, একজন শিশুকে হত্যা করা মানেই লাখো কোটি শিশুর জীবনকে শঙ্কায় ফেলে দেওয়া।
’৭৫ এ শিশু রাসেলসহ জাতির পিতার পুরো পরিবারের হত্যাকাণ্ড, এর পরবর্তীতে একের পর এক ১৯ টি ক্যু এবং ক্যু’ নিবৃত্ত করার নামে সামরিক অফিসার হত্যাকাণ্ড এবং ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা, ২০০১ পরবর্তী সময়ে বিএনপি জামায়াতের সীমাহীন সন্ত্রাস এবং ২০১৩, ১৪ও ১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি-সন্ত্রাস এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে শিশুসহ নিরীহ মানুষ হত্যার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা ফুল পূর্ণাঙ্গভাবে ফোটার আগেই অকালে ঝরে যাবে এটা কারো কাম্য নয়। আমরা এ রকম চাইনা বরং চাই বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হবে। প্রত্যেকটি শিশুর জীবন এই দেশে অর্থবহ এবং সুন্দর হবে। কেউ অকালে ঝরে যাবেনা।
আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে দেশবাসীর কাছে দেশের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি দেশের মানুষকে একটা উন্নত জীবন দেওয়ার সঙ্গে শিশুদের নিরাপত্তা প্রদানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৪ সালেই শিশু নিরাপত্তার জন্য আইন প্রণয়ন করে যান। কিন্তু দুর্ভাগ্য ঘাতকের হাতে তারই সন্তানদেরকে মৃত্যুবরণ করতে হয়, হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম বক্তৃতা করেন। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব এবং শিশু বক্তা আফসার জাফর সৃজিতা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ পরিবেশিত শেখ রাসেলের দুরন্ত শৈশব ভিত্তিক অডিও ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা ‘শেখ রাসেল এক অনন্ত বেদনার কাব্য’ এবং ‘থিম সঙ্গ’ পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা, ক্রীড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিল্পকলা-সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু-এ ৫টি ক্যাটাগরিতে প্রতিটি ১ ভরি করে ১০টি ‘শেখ রাসেল স্বর্ণ পদক’, ১০টি ল্যাপটপ ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এছাড়া, শেখ রাসেল অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের ১০টি ল্যাপটপ এবং লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলমেন্ট প্রকল্পের (এলইডিপি) আওতায় প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে হতে সর্বোচ্চ উপার্জনকারীদের মাঝে ৪ হাজারটি ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।