আপনার শিশু কি করোনাভাইরাস আতঙ্কে ভুগছে? যেভাবে বুঝবেন
অনেক দেশেই তুলে নেয়া হয়েছে লকডাউন। তার মানে কিন্তু এই নয় যে, করোনাভাইরাস মহামারী বিদায় নিয়েছে। যদিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এই সংক্রমণ নিরাময়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এমন অবস্থায় আপনি হয়তো নিজের কাজ এবং বাড়ির সবার শারীরিক সুস্থতার দিকে নজর রাখছেন, কিন্তু শিশুর মনের অবস্থা কি পড়তে পারছেন? নানা কাজ সামলে এটি একটু কষ্টাদায়কই বটে, তবে এই মহামারী শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বড় রকমের প্রভাব ফেলছে। এমনটাই প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
মহামারী ও শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য
মহামারীর কারণে যদি আপনি আতঙ্কে ভুগে থাকেন, তবে ভেবে দেখুন তা ছোট্ট মানুষটির উপর কেমন প্রভাব ফেলছে! আমাদের জীবন বলতে গেলে আমূল বদলে গেছে, নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন ঘটেছে অনেককিছুর। স্কুল এবং অনেক কর্মক্ষেত্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকায়, প্রচুর চাপ এবং উদ্বেগের মুখোমুখি হচ্ছেন অনেকেই। এটি যে কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ঘটছে, তা নয়। বরং শিশুরাও এর শিকার হচ্ছে।
আপনি যদি নিজের উদ্বেগসমূহ দূরে রাখতে পারেন, তবে শিশুও এটি দেখে শিখবে। বন্ধু, স্কুল এবং নিয়মিত খেলার সময়গুলো থেকে হঠাৎ দূরত্ব শিশুর জন্য দুঃসহ হতে পারে। তবে শিশুরা বড়দের মতো নিজেকে সামলে চলতে পারে না, তারা অল্পতেই ভীত হয়ে পড়ে। এ কারণেই এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে আপনার শিশুকে সুরক্ষিত এবং শান্ত রাখার জন্য আপনাকে প্রথমে তার ভেতরের চাপ এবং উদ্বেগের লক্ষণগুলো বুঝতে হবে। যেসব লক্ষণে বুঝবেন শিশু করোনাভাইরাস আতঙ্কে ভুগছে-
পুরোনো অভ্যাসে ফিরে গেছে
অভিভাবকেরা এই সময়ে শিশুর মধ্যে প্রতিক্রিয়াশীল আচরণ বা পুরানো অভ্যাসের বিকাশ লক্ষ্য করতে পারেন। যে শিশুটি আগে টয়লেটে গিয়ে প্রস্রাব সারতো, সে এখন ঘুমের মধ্যে বিছানায় প্রস্রাব করছে? সবসময় মা-বাবা কিংবা বড়দের আঁকড়ে ধরে থাকার চেষ্টা করছে? এরকমটা হলে তার দিকে মনোযোগ দিন। সে নিশ্চয়ই কোনো কারণে ভয় পাচ্ছে বা আতঙ্কিত বোধ করছে।
শিশু কি যখন তখন মেজাজ হারাচ্ছে? এটাসেটা ছুড়ে মারছে বা অস্থির আচরণ করছে? যদি শিশুর আচরণে এই পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করেন তবে বুঝবেন সে চাপ বা উদ্বেগ বোধ করছে। শিশুর নেতিবাচক আচরণগুলো মোকাবেলায় কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই। তাই তারা বিরক্তি, ক্রোধ এবং চঞ্চল আচরণ বেছে নেয়।
খাওয়া বা ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন
মহামারীজনিত কারণে তাদের ঘুমের ধরণে নিয়মিত পরিবর্তন ছাড়াও, যদি আপনি মনে করেন যে আপনার শিশু খুব বেশি বা খুব কম ঘুমিয়েছে, তবে সেদিকে নজর দেয়া গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষুধা হ্রাস, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খাওয়া বা একেবারেই খেতে না চাওয়ার মতো অন্যান্য পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে সচেতন হন। এই লক্ষণগুলো সংবেদনশীল সঙ্কটের ইঙ্গিত দিতে পারে।
দুঃস্বপ্ন
যদি আপনার শিশু দুঃস্বপ্নের সাথে লড়াই করে, তবে তা তার ঘুমের চক্র এবং সামগ্রিক মেজাজকে প্রভাবিত করে। এটি এমন একটি লক্ষণ যা আপনার শিশুর মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ বাড়িয়ে দিতে পারে। সে ইদানীং কী ধরণের স্বপ্ন দেখছে সে সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করুন।