সফরে শিশুর যত্ন

শিশুকে নিয়ে ভ্রমণ বা কোথাও যাওয়া খুব চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে শিশুর বয়স যত কম এই চ্যালেঞ্জের মাত্রাও তত বেশি। তার ওপর পথের ক্লান্তিও শিশুর জন্য বেদনাদায়ক হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য শিশুকে সঙ্গে নিয়ে দূরপথের যাত্রা করলে কিছু বিষয়ে আগে থেকেই সচেতন থাকতে হবে।

আরামদায়ক পোশাক

দূরপথের যাত্রায় শিশুকে বয়স বুঝে আরামদায়ক পোশাক পরাতে হবে। অনেক মা-বাবা কোথাও বেড়াতে নিয়ে গেলে শিশুকে চটকদার, ভারী কাজের উত্সবধর্মী পোশাক পরিয়ে দেন। এমন পোশাকে গরম বেশি বোধ হয়। শিশু ঘেমে সহজেই ক্লান্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। শিশুর জন্য বাড়তি কয়েক সেট কাপড় রাখতে হবে। যানবাহনে ঘেমে গেলে বা প্রস্রাব-পায়খানায় ভিজে গেলে দ্রুত পোশাকটি বদলে দিতে হবে। আবহাওয়ার ধরন বুঝে শিশুর জন্য উপযুক্ত পোশাক বেছে নিতে হবে। শিশুকে আরামদায়ক জুতা পরাতে হবে যাতে হাঁটতে কষ্ট না হয়। শিশুকে নিয়ে যাত্রা করলে একটু সকাল সকাল বের হওয়াই ভালো। এছাড়া যানবাহনের সামনের দিকে জানালার পাশের আসনে টিকিট কাটতে পারলে ভালো হবে।

বড় বা ভারী ব্যাগ পরিহার

বড় ব্যাগ বা ভারী জিনিস পরিহার করার চেষ্টা করুন। কারণ দূর যাত্রায় শিশু সঙ্গে থাকলে তাকে সামলানোর জন্য সবসময় একজনকে শিশুর পাশে থাকতে হয়। শিশু হাটতে অক্ষম হলে তাকে কোলে বহন করতে হয়। এসময় সঙ্গে ভারী ব্যাগ বিরক্তির কারণ হতে পারে। ব্যাগ সঙ্গে রাখতে হলে আলাদা আরেকজনকে সঙ্গে রাখতে পারেন। সুবিধা হবে।

শিশুর নিরাপত্তায়

শিশু হাঁটা ও কথা বলা শিখলে ওর দিকে যাত্রাপথে বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। এই বয়সী শিশুদের কৌতূহল বেশি হয়। দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যায়। এ জন্য চোখে চোখে রাখতে হবে। একটি কাগজে নিজেদের পরিপূর্ণ ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লিখে শিশুর শার্ট বা প্যান্টের পকেটে গুঁজে দিতে হবে। যাতে হারিয়ে গেলে অভিভাবককে সহজে খুঁজে বের করা যায়। বাস-ট্রেনের জানালা দিয়ে শিশু যাতে হাত বা মাথা বের না করে সেদিকেও সতর্ক থাকতে হবে। শিশুকে পথে যাতে মশা না কামড়ায় সেজন্য মশা তাড়ানোর ক্রিম ত্বকে মালিশ করে দিতে হবে। এছাড়া শিশুর জন্য দরকারি ওষুধপত্রও এসময় সঙ্গে রাখতে হবে। একটা ছোট্ট ফাস্ট এইড বক্স সঙ্গে রাখলে মন্দ হয় না। শিশুর গায়ে যাতে রোদ না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিশুর ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

পথের খাবারকে ‘না’

যানবাহনে হকাররা চটকদার ও মুখরোচক নানা খাবার ফেরি করে বেড়ায়। এসব খাবার খেতে শিশুরা আবদার করতেই পারে। এ ব্যাপারে সংযম বজায় রাখতে হবে। পথের খাবার স্বাস্থ্যকর নয়। এগুলো খেয়ে শিশু ডায়রিয়াসহ পেটের পীড়ায় পড়তে পারে। বাসা থেকে শিশুর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার রান্না করে সঙ্গে নিতে হবে। যানবাহনেও নির্দিষ্ট সময় হলে বা শিশুর ক্ষুধা পেলে তাকে খাবার খাওয়াতে হবে। খাবার যাতে গরম থাকে এ জন্য হটপট ব্যবহার করতে হবে। গাড়িতে শিশুকে পানি পানের সময় সতর্ক থাকতে হবে। কেননা পানি পানের সময় গাড়ির ঝাঁকি লেগে বিষম খেতে পারে শিশু।

শিশুর প্রিয় খেলনা নিন

দূর যাত্রায় শিশুর পছন্দের কয়েকটি খেলনাও সঙ্গে রাখতে হবে। পথে শিশু কান্নাকাটি করতেই পারে। কারো কান্না সহজেই থেমে যায়। আবার কেউ কেউ অনবরত কাঁদতেই থাকে। এ সময় শিশুকে খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে। শিশু কোনো কারণে ক্রমাগত কেঁদে গেলে আশপাশের যাত্রীরা বিরক্ত হতে পারে। এতে নিজেদের বিব্রত হওয়া যাবে না। ধৈর্য সহকারে শিশুকে দেখভাল করতে হবে। মনে রাখতে হবে সব পরিবারেই শিশু আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Warning: Undefined array key 0 in /home/freevec2/bdchild24.com/wp-content/plugins/cardoza-facebook-like-box/cardoza_facebook_like_box.php on line 924