সিসিমপুরের ১৬ বছরে পদার্পণ, রয়েছে নানা পরিকল্পনা

 হালুম, টুকটুকি, ইকরি কিংবা শিকু। আমাদের দেশের শিশুদের কাছে নামগুলো অতি পরিচিত এবং বেশ প্রিয়। বলা হচ্ছে জনপ্রিয় শিশুতোষ সিরিজ সিসিমপুরের কথা।

শিশুদের শেখাকে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করার লক্ষ্য নিয়ে ‘সিসিমপুর’ নামে টেলিভিশন অনুষ্ঠানটির যাত্রা হয়েছিল ২০০৫ সালের এই দিনে (১৫ এপ্রিল)। সে হিসেবে ১৫ পেরিয়ে আজ সিসিমপুর টিম পা রাখল ১৬ বছরে।

১৫ বছর ধরে শিশুতোষ এই অনুষ্ঠানটি নির্মিত হচ্ছে তিন থেকে আট বছর বয়সী শিশুর প্রারম্ভিক শিক্ষার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে। সেই সঙ্গে সিসিমপুরের লক্ষ্য শিশুর পিতা-মাতা ও শিক্ষকরাও। আনন্দ আর খেলার ছলে সিসিমপুর ভূমিকা রেখে চলেছে শিশুর সামগ্রিক বিকাশে।সিসিমপুর তার টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও মুদ্রিত বিভিন্ন উপকরণের মাধ্যমে শিশুকে বর্ণ চেনা, শব্দ থেকে বর্ণ চিহ্নিত করা, বর্ণ দিয়ে শব্দ মেলানো, শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি করতে সাহায্য করে।
বর্তমানে সিসিমপুরের ১২তম সিজনের প্রচার চলছে। শুরু থেকে প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে সারা দেশের প্রায় এক কোটি দর্শক অনুষ্ঠানটি উপভোগ করছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল, যেমন– আরটিভি, চ্যানেল আই, দেশটিভি ও চ্যানেল নাইনেও প্রচার হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। বর্তমানে বিটিভির পাশাপাশি অনুষ্ঠানটি প্রচার করছে দুরন্ত টিভি।
নিউ ইয়র্কভিত্তিক সিসেমি স্ট্রিট নামক শিক্ষামূলক টেলিভিশন-ধারাবাহিকের যৌথ প্রযোজনা সিসিমপুরের কার্যক্রম বাংলাদেশে পরিচালনা করছে সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ।
সিসিমপুরের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘ ১৬ বছরে পা রেখে আমরা পরিকল্পনা করছি এই শিক্ষা প্রয়াসকে কীভাবে বাংলাদেশের সব শিশুর কাছে আরও দ্রুতলয়ে পৌঁছে দেওয়া যায়। সেই ভাবনা থেকে খুব শিগগিরই উন্মুক্ত হবে সিসিমপুর-ই-প্লাটফর্ম। মোবাইল অ্যাপভিত্তিক এই প্লাটফর্মে শিশুদের জন্য থাকবে নানা ধরনের আয়োজন। যেখানে শিশুরা সিসিমপুরের ভিডিও দেখাসহ, গল্প পড়া, ছবি আঁকা, গেম খেলা ইত্যাদি নানা রকম কাজ করার সুযোগ পাবে।’
২০১০ সালে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস ট্রাস্ট পরিচালিত একটি জরিপে সিসিমপুর শিশুতোষ অনুষ্ঠান হিসেবে শীর্ষস্থানীয় এবং সামগ্রিকভাবে তৃতীয় জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হয়েছে। ২০০৭ সালে পরিচালিত এসিপিআরের একটি দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু সিসিমপুর অনুষ্ঠানটি নিয়মিত দেখে, তারা তাদের চেয়ে এক বছরের বড় শিশু, যারা সিসিমপুর দেখে না, তাদের চেয়ে ভাষা ও বর্ণ, গণিত এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিষয়ে বেশি দক্ষতা প্রদর্শন করেছে।
সিসিমপুরকে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের পরিকল্পনার কোনও শেষ নেই। মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘সারা দেশে সিসিমপুর নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছে আছে আমাদের। যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সিসিমপুর মেলার আয়োজন করা, লাইভ-শো করা, গল্পের বই সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া। আরও টিভি চ্যানেলে সিসিমপুর প্রচার করার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
সিসিমপুরের মূলমন্ত্র: পৃথিবীটা দেখছি, প্রতিদিন শিখছি। সম্প্রচারের ১৫ বছর পূর্তি এবং ১৬তম বছরে পদার্পণ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বটি সিসিমপুর ইউটিউব চ্যানেলে উন্মুক্ত হয়েছে বুধবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে। একই পর্ব বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে প্রচার হবে বিটিভিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *