শিশুর সর্দিজ্বরে কী করবেন?

প্রতিবছর শিশুদের অন্যান্য রোগের তুলনায় সর্দিজ্বরই বেশি হয়। এমনকি সর্দিজ্বরে আক্রান্তের হার ফ্লু’র চেয়েও বেশি। অধিকাংশ সর্দিজ্বরের জন্য রাইনোভাইরাসই দায়ী। একটা শিশু বছরে ৮ বার সর্দিজ্বরে ভুগতে পারে। শীতকালে সংক্রমণটি বেশি ছড়ায়।

শিশুদের সর্দিজ্বর হলে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কিছু পদক্ষেপ মেনে চললে ভয়ানক পরিণতির আশঙ্কা নেই।সুস্থতার জন্য প্রেসক্রিপশনের ওষুধ লাগে না। তবে ওটিসি ওষুধের মাধ্যমে অস্বস্তি কমানো যায়। এখানে শিশুদেরকে সর্দিজ্বরের সময় স্বস্তি দিতে করণীয় উল্লেখ করা হলো।

সাধারণত শিশুদের সর্দিজ্বরের স্থায়িত্ব ৭ থেকে ১০ দিন। এই সংক্রমণে শিশুদের উল্লেখযোগ্য উপসর্গ হলো- নাক বন্ধ হওয়া বা নাক থেকে পানি পড়া, ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে জ্বর, কাশি ও খেতে না চাওয়া। উপসর্গের সুনির্দিষ্ট সময় নেই।এটা এক শিশু থেকে আরেক শিশু ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত এই সংক্রমণের প্রথম তিনদিনের মধ্যে জ্বর এসে থাকে।দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে উপসর্গের মাত্রা সর্বোচ্চ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। চতুর্থ দিন থেকে উপসর্গ সেরে ওঠতে থাকে। তবে কাশির স্থায়িত্ব ১০ দিনের বেশিও হতে পারে।

শিশুর সর্দিজ্বরের অস্বস্তি কমাতে যা করবেন

* নাক থেকে পানি পড়া বা নাকবদ্ধতা উপশমের জন্য ঘরে হিউমিডিফাইয়ার চালু করতে পারেন।

* শ্লেষ্মা পাতলা করতে স্যালাইন নোজ ড্রপস ব্যবহার করতে পারেন। তারপর বাল্ব সিরিঞ্জ দিয়ে শ্লেষ্মা অপসারণ করতে হবে।

* শিশুর বয়স ২ বছর পূর্ণ না হলে ওটিসি কাশির ওষুধ খাওয়াবেন না। সর্দিজ্বরের এমন ওষুধও ব্যবহার করবেন না, যেখানে ডিকনজেস্ট্যান্ট বা অ্যান্টিহিস্টামিন রয়েছে। ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য এসব ওষুধের সঠিক ডোজ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের মতে, ডিকনজেস্ট্যান্ট ও অ্যান্টিহিস্টামিনের ওভারডোজে শিশুদের খিঁচুনি, দ্রুত হৃদস্পন্দন ও এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। কিছু ডিকনজেস্ট্যান্ট ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্যও উপযুক্ত নয়। শিশুর বয়স ৬ বছর না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত অ্যান্টিহিস্টামিনও ব্যবহার করা উচিত নয়।

শিশুকে যখন চিকিৎসকের কাছে নেবেন

সাধারণত সর্দিজ্বর নিজে নিজে চলে যায়, কিন্তু উপসর্গের গতিপ্রকৃতি অস্বাভাবিক মনে হলে শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের হাউসটনে অবস্থিত বেলর কলেজ অব মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক জুলিয়ানা নিকোলস এসব অবস্থার প্রেক্ষিতে শিশুদেরকে হাসপাতালে নিতে পরামর্শ দিয়েছেন: ২ মাসের কম বয়সী বাচ্চার জ্বর ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে ওঠলে, ১০ দিন পার হওয়ার পরও কাশি রয়ে গেলে এবং শিশু ক্রমাগত বমি করলে।

ভেরি ওয়েল হেলথের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাচ্চার বয়স ১২ সপ্তাহের কম হলে জ্বর আসলেই চিকিৎসক দেখাতে হবে, শরীরের তাপমাত্রা কতটুকু বেড়েছে তা বিবেচ্য নয়। অন্যদিকে অন্যান্য শিশুর জ্বর ১০৪ ডিগ্রির ঊর্ধ্বে গেলে অবশ্যই চিকিৎসক দেখানো উচিত।

তথ্যসূত্র: ইনসাইডার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Warning: Undefined array key 0 in /home/freevec2/bdchild24.com/wp-content/plugins/cardoza-facebook-like-box/cardoza_facebook_like_box.php on line 924