শিশুর ভালো ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলার উপায়

শিশুরা ঘুমাতে চায় না সহজে। ফলে তাদের ঘুমের নির্দিষ্ট অভ্যাস গড়ে তোলা সহজ নয়।

নবজাতক থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার জন্যই রাতে নির্ভেজাল ঘুম অত্যন্ত জরুরি। সন্তানের ঘুমের ঘাটতি মেটাতে তাই যখনই সে ক্লান্ত হয় তখনই তাকে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয়। আর অসময়ে ঘুমানোর কারণে যখন সবার ঘুমানোর সময় তখন সে আর ঘুমাতে চায় না।

অপরদিকে সন্তানের ঘুম পর্যাপ্ত না হলে তার উৎফুল্লতা কমে, বিরক্তি বাড়ে, কান্না লেগেই থাকে। ঘুমের অভাবে মস্তিষ্ক ক্লান্ত থাকার কারণে শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশও বাধাগ্রস্ত হয়।

শিশুর এবং পরিবারের অন্যদের পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হলে তার ঘুমকে নির্দিষ্ট সময়ে বেঁধে নিতে হবে, সেটাকে শিশুর অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।

মা ও শিশু-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হলো সেই কাজে সফল হওয়া উপায়।

ঘুমানোর আগের রুটিন: গোসল, কাপড় বদলানো আর দাঁত মাজা ঘুমের জন্য প্রস্তুতি ইঙ্গিত করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে একই সময়ে শিশুকে গোসল না করালেও অন্তত দাঁত ব্রাশ করিয়ে পরিষ্কার কাপড় পরিয়ে ঘুম পাড়াতে নিয়ে গেলে ক্রমেই সেটা শিশুর অভ্যাসের অংশ হয়ে আসবে। ফলে ঘুম আসবে সহজেই।

রাতের খাবার: শিশুর রাতের খাবারটা ঘুমানো দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে হতে হবে। এর আগে খেলে শিশুর আবার ক্ষুধা লেগে যেতে পারে কিংবা ক্ষুধার কারণে ঘুম ভেঙে যেতে পারে। আবার ঘুমানোর কিছুক্ষণ আগেই রাতের খাবার খেয়ে শিশু খেলতে আগ্রহী হয় বেশি, ঘুমাতে চায় না।

শোবার ঘরের পরিবেশ: শিশুদের ঘুম পাতলা হয়, সামান্য শব্দেই তার ঘুম ভেঙে যাওয়া সম্ভব। আবার ঘরে আলো থাকলে সেটাও তার ‍ঘুমের সমস্যা তৈরি করবে। তাই শিশুর শোবার ঘরটায় যাতে ঘুমানোর জন্য আরামদায়ক একটা পরিবেশ থাকে সেদিয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

বৈদ্যুতিক যন্ত্রে ব্যবহার: রাতে ঘুমানোর আগে শিশুদের টিভি কিংবা মোবাইল দেখা থেকে বিরত রাখতে হবে। এসব যন্ত্রের বৈদ্যুতিক পর্দা থেকে নিঃসৃত নীল আলো ঘুমকে দূরে রাখে। আর কার্টুন দেখা বা গেইম খেলার সুযোগ থাকতে ঘুমাতে যাওয়া শিশুকে খুঁজে পাওয়া হয়ত অসম্ভব।

ক্যাফেইন গ্রহন না করা: প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ঘুম তাড়ানো জন্য যে ‘ক্যাফেইন’ গ্রহণ করে তা যদি শিশু ঘুমানোর আগে গ্রহণ করে তবে তার ঘুম আসবে না এটাই স্বাভাবিক। চা-কফি ছাড়াও ক্যাফেইন’য়ের আরও উৎস আছে। যেমন- চকলেট ও কোমল পানীয়। আর দুটোই ঘুমানোর আগে খাওয়া শিশুর জন্য অসম্ভব নয়।

ঘুমের নির্দিষ্ট সময় ধরে রাখা: গতরাতে অনেক যন্ত্রনা করেছে, ঘুমায়নি বলে আজকে দুপুরে তাকে ঘুম পাড়ানো প্রবল চেষ্টা দেখা যায় অনেকের মাঝে। হয়ত ভাবছেন রাতের ঘুমের ঘাটতিটা কমে যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো বিকেল কিংবা সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুমানোর পর শিশুর সকল ক্লান্তি হারিয়ে গেছে। ফলে রাতে ঘুমানোর স্বাভাবিক সময়ে তার কোনো ক্লান্তি নেই, চোখে ঘুম নেই।

এভাবেই শিশুর ঘুমের নিয়মটা নষ্ট হয়। আর তার কারণে পরিবারের মানুষদেরও জেগে থাকতে হয় প্রচণ্ড ক্লান্তির পরেও। ফলে তাদের ঘুমের রুটিনও নষ্ট হয়।

তাই দুপুরে ঘুম না পাড়িয়ে খেলতে দিন। রাতে ঘুমানোর সময় বেশ কিছুক্ষণ আগেই সে ঘুমে কাতর হয়ে উঠবে। তখন স্বাভাবিক সময়ে দুএক ঘণ্টা আগে ঘুম পাড়িয়ে দিলেও রুটিন নষ্ট হবে না।

বিডি চাইল্ড/এপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *