শিশুর ওজন ঠিক আছে তো…?
পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গে সঙ্গে শিশু পর্যাপ্ত পানি পান করছে কি না, কোষ্ঠকাঠিন্য আছে কি না, পর্যাপ্ত খেলাধুলা করছে কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
শিশুর ওজন নিয়ে মা-বাবার চিন্তার শেষ নেই। ওজন ঠিকঠাক বাড়ছে কি না, বয়স অনুপাতে ওজন ঠিক আছে কি না, সবার বাচ্চা নাদুসনুদুস, আমারটা এত হ্যাংলা, দুবলা কেন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করেন মা-বাবারা।
আমরা ভাবি নাদুসনুদুস হলেই বাচ্চার স্বাস্থ্য ভালো। ওজন যেভাবে পরিমাপ করা হয় তার একটি পরিমাপক হলো বিএমআই বা বডি ম্যাস ইনডেক্স। এই বডি ম্যাস ইনডেক্সে বাচ্চার উচ্চতার সঙ্গে ওজনের তুলনা করা হয়। শিশুর ওজন বৃদ্ধি নিয়ে মা-বাবার সন্দেহ হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে বডি ম্যাস ইনডেক্সের সাহায্যে বাচ্চার ওজন সঠিক পর্যায়ে আছে কি না, বুঝতে হবে। এই বডি ম্যাস ইনডেক্সে শিশুর ওজন আন্ডার ওয়েট (কম ওজন), স্বাভাবিক ওজন ও অতিরিক্ত ওজন—এভাবে ভাগ করা হয়।
সুতরাং শিশুর ওজন বাড়ছে না ভেবে অস্থির হলে চলবে না। খেয়াল রাখতে হবে শিশুকে যথেষ্ট পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হচ্ছে কি না। লক্ষ রাখতে হবে শিশুর খাদ্যে শর্করা যেমন ভাত, আলু ইত্যাদির পাশাপাশি পর্যাপ্ত আমিষ ও শাকসবজি আছে কি না। শিশুর খাদ্যে অবশ্যই ফলমূল রাখতে হবে।
পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গে সঙ্গে শিশু পর্যাপ্ত পানি পান করছে কি না, কোষ্ঠকাঠিন্য আছে কি না, পর্যাপ্ত খেলাধুলা করছে কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
এরপরও যদি শিশুর ওজন না বাড়ে, তাহলে শিশুর দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগ আছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে। শিশু কিছুদিন পরপর জ্বর, নানা ধরনের ইনফেকশন যেমন বারবার সর্দি-কাশি হওয়া, ইউরিন ইনফেকশন, ডায়রিয়া, মলের সঙ্গে রক্তপাত এ–জাতীয় সমস্যা হচ্ছে কি না, খেয়াল করতে হবে। সেই সঙ্গে লক্ষ রাখতে হবে শিশু ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে কি না, যা অ্যানিমিয়ার লক্ষণ। এ ছাড়া শিশুর খেলাধুলায় আগ্রহ কমে যাচ্ছে কি না এবং শিশুর জন্মগত হার্ট বা শ্বাসযন্ত্রের কোনো রোগ আছে কি না, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে। শিশুর এ–জাতীয় কোনো রোগের লক্ষণ থাকলে দ্রুত শিশু রোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
ডা. রাহনুমা আমিন: মেডিকেল অফিসার, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা