শিশুদের জন্য বিনোদন জরুরি
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সাইফুল্লাহ খালেদ অন্যান্য দিনের মতোই রুটিন অনুযায়ী বন্ধুদের সঙ্গে মেতে ছিলেন আড্ডায়। আড্ডার পাশেই বেশকিছু অসহায় শিশুর দিকে প্রতিনিয়ত চোখ আটকায়, ভাবনায় আসত তাদের জীবন, দুর্দশা নিয়ে। এরপরই ঠিক করলেন তাদের নিয়ে কিছু করবেন, ভাবের সঙ্গে কাজের মিল রেখে দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ঠিক করলেন তাদের পড়ালেখার পাশাপাশি গরিব বা রাস্তায় ছেলেমেয়েদের পড়ানো এবং অন্যান্য বিষয় শেখানোর বিষয়ে। এরপরই প্রতিদিন ক্লাস শেষে রুটিন ছিল তাদের সঙ্গে সময় কাটানো। কিন্তু তিনজনে আর কত? ছয় মাসেই তাদের ছোট সংগঠনটিকে বড় করতে জোগাড় করলেন আগ্রহী আরও তরুণ-তরুণী। দিয়ে দিলেন একটি সুন্দর নাম ‘হেল্প দ্য ফিউচার’। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
কিশোর শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি দেশ ও দশের সাহায্য করার মনোভাব সবার মাঝে সৃষ্টি করা, অসহায়দের সহায়তা ও সৃজনশীল কাজ করার মনোভাবকে বিকাশ এর উদ্দেশ্য এবং ‘একটি লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে বাঁচে’ নিজেদের এই মূলমন্ত্র নিয়ে ২০১৪ সালে গড়ে ওঠা তাদের এই সংগঠন মূলত কিশোরদের নিয়েই কাজ করে।
হেল্প দ্য ফিউচার-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জানতে চাইলে সংগঠনটির প্রধান সাইফুল্লাহ খালেদ বলেন, ‘আগামীর স্বপ্নবাজ শিশুকিশোরকে একত্রিত করে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি তাদের প্রতিভাকে বিকশিত করে চারিত্রিক গুণাবলীর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করে দেশ ও দশের সেবা করাই হেল্প দ্য ফিউচারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।’ প্রতি বছর এ সংগঠনের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে শিক্ষা উপকরণ। শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরণ, দুই ঈদে দেওয়া হচ্ছে নতুন জামা ও ঈদ সামগ্রী।
সম্প্রতি বিশ্ব পর্যটন দিবসে, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে আয়োজন করেছে সৈকত পরিচ্ছন্ন অভিযান ও সচেতনতা কার্যক্রম যেখানে অংশগ্রহণ করেছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত পর্যটকরা। এ ছাড়া দেশের কোনো অঞ্চল ক্ষতির মুখে পড়লেই এগিয়ে যাচ্ছেন সংগঠনের সদস্যরা। ঈদে যখন সবাই ব্যস্ত পরিবারের সঙ্গে, তখন অসহায়দের পাশে কাটাচ্ছেন নিজেদের সময়। সবকিছুর পাশাপাশি কাজ করছেন শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে। শিশুবান্ধব এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। অভিনন্দিত করি। পাশাপাশি অন্য সামর্থ্যবানরাও এগিয়ে এলে শিশুরা পাবে সত্যিকারের মানুষ হওয়ার সুযোগ। শিশুর বিনোদন থেকে শুরু করে সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ সৃষ্টি করা জরুরি।