শিশুকে যে কথাগুলো কখনো বলবেন না
অভিভাবকত্ব সহজ কোনো বিষয় নয়। শিশুর সঙ্গে কী বলতে হবে এবং কখন বলতে হবে তা জানা জরুরি। শিশুর সঙ্গে কথা বলার সময় আপনার বলা শব্দগুলোর ওজন অনেক। আপনার কথাগুলোই তাদের উপলব্ধি এবং আবেগকে আকার দেয়। আমরা যা বলি তা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কিছু কথা অনিচ্ছাকৃতভাবে তাদের আত্মসম্মান এবং আত্মবিশ্বাসের ক্ষতি করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, শিশুর সঙ্গে কোন কথাগুলো বলা থেকে বিরত থাকতে হবে-
‘তুমি ঠিক আছো, কিছু হয়নি’
শিশু যখন কোনোকিছুতে আঘাত পায় আমরা তখন তাকে কান্না থেকে বিরত রাখার জন্য মিথ্যা বলে থাকি। বলি, ‘তুমি ঠিক আছো, কিছু হয়নি’। আসলেই কি তাই? আপনি প্রচণ্ড ব্যথা পেলে কেউ যদি বলে যে আপনি ঠিক আছেন, আপনার কিছুই হয়নি, তখন মেনে নিতে পারবেন? শিশুরা কিন্তু প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই তীব্রভাবে আবেগ অনুভব করে। যখন তারা বিচলিত বা আহত হয়, তাদের অনুভূতি স্বীকার করুন। এতে তারা সঠিক অভিজ্ঞতা নিয়ে বড় হবে। তখন তার ব্যথায় সহানুভূতিশীল হোন।
‘এখনই সরি বলো!’
শিশুকে ক্ষমা চাইতে শেখানো গুরুত্বপূর্ণ, তবে তার অপরাধ সম্পর্কে বুঝতে না দিয়েই তাকে দিয়ে সরি বলাবেন না। ক্ষমা চাওয়ার পরিবর্তে তাদের কর্মের প্রভাব বুঝতে সাহায্য করুন। পুরো বিষয়টি তার কাছ থেকে জানতে চান এবং এমন অবস্থায় কী করা উচিত তা তাকেই জিজ্ঞাসা করুন। এতে তার কোনো ভুল হয়ে থাকলে সে সহজেই বুঝতে পারবে।
কর্তৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তা যুক্তিযুক্ত হতে হবে। কেবল আপনি বলেছেন বলেই শিশুটি যেকোনো কিছু করতে বাধ্য নয়। কারণ সেও আলাদা একজন মানুষ। মনে রাখবেন, ছোটবেলা থেকেই মানুষের ব্যক্তিত্ব গঠন হতে থাকে। তাই তাকে ভুল পথে নেওয়া যাবে না। তাকে সবকিছু করতে বাধ্য করার মানে হলো সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা শেখানোর সুযোগ মিস করা। পরিবর্তে, তারা বুঝতে পারে এমনভাবে আপনার অনুরোধের পেছনে যুক্তি ব্যাখ্যা করুন। উদাহরণস্বরূপ, ‘আমাদের এখন পার্ক ছেড়ে যেতে হবে কারণ অন্ধকার হয়ে আসছে, এবং আমাদের নিরাপদে বাড়ি ফিরতে হবে।’
‘কান্না থামাও’
শিশুকে কান্না থামাতে বলার মানে হলো তার আবেগকে উড়িয়ে দেয়া এবং অনুভূতি দমন করা। এর পরিবর্তে তাকে সান্ত্বনা এবং আশ্বাস দিন। তাকে আলিঙ্গন করুন এবং বলুন, ‘কান্না করা ঠিক আছে। আমি তোমার জন্য আছি’। মানসিক অভিব্যক্তি প্রকাশে শিশুকে সাহায্য করুন। এতে তাদের বেড়ে ওঠার পথ সহজ হবে।
এইচএন(Dhaka Post)