বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস

ডেক্স নিউজ: ব্রিটিশ গবেষকরা বলেছেন যে, নতুন একটি ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন শিশুদের ক্ষেত্রে ৭৭ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে, যা মশা-বাহিত মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য গেম চেঞ্জার প্রমাণিত হতে পারে।

অক্সফোর্ডের গবেষকরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বুর্কিনা ফাসোর ক্লিনিকাল পরীক্ষায় অক্সফোর্ডের জেনার ইনস্টিটিউট বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি ম্যাট্রিক্স-এম ভ্যাকসিনটি ২০১৯ সালে ৪৫০ জন শিশুকে দেয়ার পর এক বছর পর্যবেক্ষণে ৭৭ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। কোন গুরুতর প্রতিক‚ল ঘটনা ধরা পড়েনি।

২০৩০ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশ কার্যকারিতা প্রমাণে গবেষকদের জন্য জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত লক্ষ্য ভেদ করা ম্যালেরিয়ার এটি প্রথম ভ্যাকসিন।

সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এবং মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা নোভাভ্যাক্সের সহযোগিতায় এখন চারটি আফ্রিকার দেশে ৪,৮০০ শিশুকে নিয়ে একটি বিস্তৃত ফেজ ৩ ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হবে।

জেনার ইনস্টিটিউটের প্রধান প্রফেসর অ্যাড্রিয়ান হিল জানিয়েছেন যে, ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ে পরীক্ষার ফলাফল ‘এক দুর্দান্ত দিন’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। এই জেনার ইনস্টিটিউট করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন তৈরি করেছে যা এখন বিশ্বব্যাপী অ্যাংলো-সুইডিশ ফার্মান জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকা বিতরণ করছে।

প্রফেসর অ্যাড্রিয়ান হিল আমাদের পিএ নিউজকে বলেন, ‘আমাদের এটিকে আরও গড়ে তুলতে হবে, আমাদের সমস্ত ডাককে একপর্যায়ে রাখতে হবে, আমাদের কোনো সুরক্ষা সঙ্কেত এড়ানো দরকার, তবে আমি মনে করি প্রতিক‚লতা এখন আমাদের পক্ষে রয়েছে, আমরা এটি পেতে পারি’।

তিনি উল্লেখ করেন যে, কোভিড ভ্যাকসিনগুলো দ্রুত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যখন ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে একটির জন্য প্রথম ট্রায়ালগুলো ১৯৪০ এর দশকের শেষের দিকে ছিল।

আজ রোববার বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের আগে, জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা জোর দিয়ে বলেছে যে, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪ লাখ মানুষ মারা যায় এমন রোগ নির্মূল করা একটি ‘সকল দেশের কার্যকর লক্ষ্য’।

তবে একটি ভ্যাকসিনের অগ্রগতি মূল বিষয় হিসাবে রয়ে গেছে এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন যে, অক্সফোর্ডের পরীক্ষার ফলাফল একটি ‘যুগান্তকারী অর্জন’।

তিনি টুইটারে বলেন, ‘ম্যালেরিয়া এক বছরে কয়েক হাজার শিশুকে হত্যা করে। একটি কার্যকর টিকা বিশ্বব্যাপী এ ট্র্যাজেডির সমাপ্তির সম্ভাবনা বহন করে’।

প্রফেসর অ্যাড্রিয়ান হিল বলেন, ‘কোভিডের মতো আফ্রিকাতে গত বছর ম্যালেরিয়া কমপক্ষে চারগুণ বেশি মানুষকে হত্যা করেছে’ এবং কোনো মুহূর্তের জন্য কেউ প্রশ্ন করেনি যে, আফ্রিকার কোভিডের জরুরি ব্যবহারের পর্যালোচনা এবং অনুমোদন হওয়া উচিত।

সেরাম ইনস্টিটিউট বছরে কমপক্ষে ২০ কোটি ডোজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং হিল বলছেন যে, ম্যাট্রিক্স-এম ‘লাইসেন্স অর্জন করলে জনসাধারণের স্বাস্থ্যের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে’।

বুর্কিনা ফাসোর স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক শার্লামগেন ওয়েড্রাওগো বলেন: ‘আফ্রিকার শৈশবে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ম্যালেরিয়া। ‘আমরা বুর্কিনা ফাসোতে বিভিন্ন নতুন ভ্যাকসিন পরীক্ষার্থীদের ট্রায়ালে সমর্থন দিচ্ছি এবং এসব নতুন তথ্য দেখায় যে, আসন্ন বছরগুলোতে খুব কার্যকর ম্যালেরিয়ার নতুন ভ্যাকসিনের লাইসেন্স আসতে পারে। ‘এটি ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ এবং অনেকের জীবন বাঁচানোর জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নতুন উপাদান হবে’। ক্লিনিকাল পরীক্ষার ফলাফলগুলো ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেটের ওয়েবসাইটে একটি প্রিন্ট প্রবন্ধে জানানো হয়েছিল। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

বিডি চাইল্ড/এপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *