প্রতিদিন আরও ছয় হাজার শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা ইউনিসেফের
করোনা মহামারিতে নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় আগামী ছয় মাসে বিশ্ব জুড়ে প্রতিদিন অতিরিক্ত প্রায় ছয় হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের শিশু উন্নয়ন বিষয় তহবিল ইউনিসেফ। বুধবার (১৩ মে) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এই তথ্য জানিয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের মার্চে পাঁচ বছরের শিশুদের জরুরি স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ ২৫ শতাংশ কমেছে।.
ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ জার্নালে প্রকাশিত জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণার বরাত দিয়ে ইউনিসেফের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছালে ১১৮টি নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আগামী ছয় মাসের মধ্যে নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত হয়ে ও শিশু অপুষ্টি বেড়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী অতিরিক্ত ১২ লাখ শিশুর মৃত্যু ঘটতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, আগের তিন মাসের তুলনায় এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত গর্ভকালীন ও গভ পরবর্তী সেবা গ্রহণ ব্যাপক মাত্রায় কমেছে। এছাড়া একই সময়ে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে সন্তান জন্ম দানের পরিমাণ কমেছে ২১ দশমিক ২ শতাংশ।
করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশে হাম ও রুবেলের টিকাদান ক্যাম্পেইন স্থগিত করা হয়েছে। তবে শিশুদের নিয়মিত টিকাদান চালু থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে টিকা দেওয়া হচ্ছে না এবং লকডাউনের কারণে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে টিকা পরিবহনও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নতুন গবেষণার বরাতে ইউনিসেফের বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ আরও কমে গেলে আগামী ছয় মাসে পাঁচ বছরের কম বয়সের অতিরিক্ত ২৮ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে। এসব শিশুর মৃত্যুর ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রাখবে অপুষ্টি।
বর্তমানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মহামারি মোকাবিলায় মনোযোগী হওয়ায় মা, নবজাতক ও শিশুদের নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা অব্যাহত রাখতে সরকারের সঙ্গে কাজ করছে ইউনিসেফ। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে নতুন করে দুই হাজার ডাক্তার ও পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সুদৃঢ় করতে এই খাতে আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।