পোর্টেবল সুইমিং পুলে শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ উদ্বোধন
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, বিশ্বে শিশু মৃত্যুর একটি অন্যতম প্রধান কারণ পানিতে ডুবে মৃত্যু। প্রতিবছর বিশ্বে দুই লাখের অধিক শিশু মারা যায় পানিতে ডুবে।
তিনি বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় শিশুর জীবন সুরক্ষায় সাঁতার প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে পাঁচ লাখ ষাট হাজার শিশুকে সাঁতার প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। ‘সমন্বিত শিশু যত্ন কেন্দ্রের মাধ্যমে শিশুদের প্রারম্ভিক বিকাশ ও সুরক্ষা, উন্নয়ন ও শিশুর সাতার প্রশিক্ষণ’ প্রকল্প থেকে ষোলটি জেলায় পঁয়তাল্লিশটি উপজেলায় আরো তিন লাখ ষাট হাজার শিশুকে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রশিক্ষণ প্রদান, সচেতনতা বৃদ্ধি, সম্মিলিত উদ্যোগ ও সঠিক কর্মপরিকিল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা আরো বলেন, বাংলাদেশসহ পানিতে ডুবে মৃত্যুর বৈশিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বিগত ২৮শে এপ্রিল, ২০২১ তারিখে সর্বসম্মতিক্রমে পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ বিষয়ক ঐতিহাসিক একটি রেজুলেশন গ্রহণ করে। পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি এবং জাতীয় প্রতিরোধ কর্মকৌশল এবং কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২৫ শে জুলাইকে বিশ্ব পানিতে ডুবা প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা আজ সোমবার ঢাকায় বাংলাদেশ বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব পানিতে ডুবা প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ শিশু একাডেমি চত্বরে পোর্টেবল সুইমিং পুলে শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ ঘোষণার ঘোষণার ১৫ বছর পূর্বে জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রনয়ণ করেন, শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুর উন্নয়ন, সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সচিব মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, প্রতিদিন পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা কোভিডে মৃত্যুর চেয়ে বেশী। পানিতে ডুবে মৃত্যু নিরব ঘাতক। পুকুর ও জলাশয়ের সংখঅ্যাা কমে যাওয়ায় শিশুদের সাঁতার শেখার সুযোগ কমে যাচ্ছে। পোর্টেবল সুইমিং পুল শিশুদের সাঁতার শেখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শিশু একাডেমির মহাপরিচালক শরিফুল ইসলাম। বক্তৃতা করেন সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড রিসার্চ এর উপনির্বাহী পরিচালক ড. আমিনুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ড মহিউদ্দীন আহমেদ, অতিরক্ত সচিব মো. মুহিবুজ্জামানসহ মন্ত্রণালয় ও দপ্তর সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ। এসময় শিশু ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে শিশুরা পুলে সাঁতার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
উল্লেখ্য, পোর্টেবল সুইমিং পুলটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ সাধারণত ৪০ ফুট বাই ২০ ফুট এবং পুলটির নিরাপত্তার জন্য চতুর্দিকে ফেন্সিং রয়েছে। পুলটিতে ৭২ হাজার লিটার পানি থাকবে যা নিয়মিত প্রয়োজনীয় কেমিক্যাল দিয়ে জীবাণুনাশক ও পরিষ্কার করা হবে। পুলে পানি সাপ্লাই ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ মেশিনারিজ পৃথক ওয়াশরুম রুম এবং চেঞ্জিংরুম থাকবে। শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণের জন্য ছয়জন প্রশিক্ষক থাকবে।