দুই ব্রিটিশ মানবিক শিশুর পাশে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
ইয়েমেন সংকটের কথা জানতে পেরে আকুল হয়ে ওঠে পূর্ব লন্ডনের ছয় বছর বয়সী দুই শিশু। আয়ান মুসা ও মিকাইল ইসাক নামের এই দুই বন্ধু যুদ্ধপীড়িত দেশটির শিশুদের জন্য কিছু একটা করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে বাড়ির সামনেই লেমোনেড আর কুকির দোকান নিয়ে বসে তারা। আর ছোট্ট দুই শিশুর এই উদ্যোগের খবর পেয়ে তাদের জন্য তহবিল পাঠিয়ে দিয়েছেন হলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। প্রথমে বুঝে উঠতে না পারলেও পরে ঠিকই হলিউড তারকাকে পাল্টা শুভেচ্ছা পাঠিয়েছে শিশু দুটি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।.
প্রায় নয় বছর ধরে চলা ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। জাতিসংঘ বলছে দেশটির কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। বেঁচে থাকার জন্য দেশটির প্রায় দুই কোটি ৪০ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তার প্রয়োজন।
আয়ানের মা বলেন, এটা ‘খানিক অদ্ভূত হলেও চমৎকার’ আবেদন। আদিলা মুসা পুরো প্রক্রিয়াটা ব্যাখ্যা করে জানান, আয়ান ও মিকাইলের খবর জানার পর হলিউড তারকা প্রথমে তার ব্রিটিশ প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে সেই প্রতিনিধির মাধ্যমে তিনি শিশুদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।.
লন্ডনের রেডব্রিজ এলাকায় বসবাসকারী শিশু দুটি এই সপ্তাহের শেষে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির কাছ থেকে চমৎকার একটি চিঠি এবং উদার অনুদান গ্রহণ করে। এগুলো পাওয়ার পর প্রথমে শিশুদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিলো জানতে চাইলে আদিলা মুসা জানান, প্রথমে তারা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি কে তা চিনতে পারেনি যদিও তাদের বাবারা খুবই উৎসাহী হয়ে ওঠে। পরে শিশুদের বোঝানো হয় জোলি টম রাইডার এবং ম্যালিফিসিয়েন্ট ছবির তারকা। তখন তারা খুবই মজা পায়। পরে শিশু দুটি অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান যেখানে তারা বলে, ‘তুমি যদি কখনো লন্ডনে আসো তাহলে এক গ্লাস ফ্রেশ লেমোনেড কিনতে ভুল করবে না।’
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র বিশেষ দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি আগেও ইয়েমেন সংকট নিয়ে সরব হয়েছেন। আদিলা মুসা জানান, জোলি অনুদান পাঠানোর পর দুই শিশুর উদ্যোগ নিয়ে ব্যাপক সচেতনতা বেড়েছে আর সারা দুনিয়া থেকে তাদের কাছে অনুদান পাঠানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দুই শিশু ৬৭ হাজার ইউরোর বেশি তহবিল যোগাড় করতে পেরেছে।
আগামী সপ্তাহ থেকে নিজেদের স্কুলে ফিরে যাবে দুই মানবিক বন্ধু আয়ান মুসা ও মিকাইল ইসাক। তবে ইয়েমেন সংকট উত্তরণে সব পক্ষের আরও বেশি সম্পৃক্ততা দরকার বলে মনে করেন আদিলা মুসা।