তাদের নেই ঈদ আনন্দ

ঈদ শিশুদের জন্য বয়ে আনে বাড়তি এক আনন্দ। ঈদ এলেই নতুন পোশাক, নানারকম খাবার, পরিবারের সবার সাথে আনন্দ মজা এবং ঘুরাঘুরিতে মেতে উঠে। কিন্তু ঈদের এই আনন্দ-উল্লাস যেনো সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের ধরাছোঁয়ার বাইরে।

পথ শিশুদের ঘর নেই, বাড়ি নেই, থাকার কোন জায়গা নেই, ঈদ আসে, ঈদ যায়, কিন্তু সেই ঈদ কখনই তাদের জন্য উৎসব হয়ে ওঠেনা। কারণ নেই তাদের স্বজন, তাদের না আছে নতুন জামা, নেই কোন ভালো খাবারের ব্যবস্থা। নতুন টাকার সালামী বা কে দিবে। তাদের কাছে ঈদের দিন অন্য দিনের মতোই সমান। সংসদ ভবনে সকাল থেকেই বসে আছে দুই ভাই সাফি আর রাফি। ঈদে নিয়ে তাদের কোন চিন্তা নেই। দিন শেষে পেট ভরে একবেলা খেতে পারলে তাদের শান্তি। তারা বলে, “ঈদ তাদের কাছে অন্য দিনের মতই, ঈদের দিন বলে কেউ তাদেরকে খাবার দিবে না বরং তাদেরকে নিজেদের খাবার নিজেদেরকেই যোগাড় করতে হবে, এক বেলা পেট ভরে খেতে পারলেই তাদের শান্তি।”

ধানমণ্ডি লেকের পাশে দেখা যায় আরেকজন শিশু, বয়স তার ১২ বছর। তার নাম জারিফ, তাকে দেখা যায় সবার কাছে ফুল বিক্রি করতে, তীব্র গরমের মধ্যেও সে ফুল বিক্রিতে ব্যস্ত, তার সাথে কথা হলে সে বলে, “বাসায় তার অসুস্থ মা আছে, আছে এক বোন; বাবা কোথায় আছে সে জানে না। ফুল বিক্রি করে এই টাকা দিয়ে মায়ের চিকিৎসা করাবে সাথে পরিবারের সবার জন্য খাবার যোগাড় করে বাড়ি ফিরবে সে।”

হাতিরঝিলে দেখা মিলে আরেক শিশু শরিফের সাথে, বিভিন্ন মানুষের কাছে সে বাদামের ঝোলা নিয়ে যাচ্ছে বাদাম বিক্রির জন্য। সে জানাল, “তার মত আরো অনেকেই এখানে বাদাম, ফুল বিক্রি করে। এসব বিক্রি করে তারা তাদের খাবার যোগাড় করে।” তার কাছে ঈদ কেমন কাটছে জানতে চাইলে সে জানায়, “ঈদ আমাদের কাছে অন্য দিনগুলোর মত, সবাই এই দিন নতুন পোশাক পরে, ভালো খাবার খায় কিন্তু আমাদের ভালো খাবার দেয়ার মত কেউ নেই, নতুন পোশাক দেয়ার মত কেউ নেই। তবে ঈদের দিন মানুষের সংখ্যা বাড়ে এই জায়গাগুলোতে, যার ফলে একটু বিক্রি বাড়ে।” আজকে একটু বেশি বাদাম বিক্রি হলে ছোট ভাই এর জন্য বেলুন কিনে নিয়ে যাবে বলে জানায়।

তাদের মত অনেক পথ শিশু আছে যাদেরকে ঈদের আনন্দ স্পর্শ করতে পারে নি, তাদের কাছে এক বেলা খাবার যোগাড় করাটায় বড় চ্যালেঞ্জ। একদিন দেশের সব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরকেও স্পর্শ করবে ঈদের আনন্দ, ঈদ হয়ে উঠবে সার্বজনীন এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

বিডিচাইল্ড২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *