ঢাকার যেসব এলাকা লকডাউন
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিনই রোগী শনাক্ত হচ্ছে। শনাক্ত হওয়ার পরপরই রোগীর বসবাসের বাড়ি, সড়ক অথবা এলাকাটি লকডাউন করে দিচ্ছে পুলিশ। রাজধানীতে দ্রুত এই লকডাউন বাড়ছে। মহানগরীতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তাই প্রতিদিন লকডাউনের এলাকাও বিস্তৃত হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, আইইডিসিআর’র নির্দেশনা অনুযায়ী এলাকা বা বাড়িগুলো লকডাউন করা হচ্ছে।
রমনা থানা এলাকার যেসব রোড লকডাউন
মগবাজারের রিজেন্ট টাওয়ার লকডাউন করে দিয়েছে পুলিশ। তবে ওই টাওয়ারে ২৮টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের অনেকে কর্মজীবী, তাদের অফিসে যেতে হয়। তাই পুরোপুরি লকডাউন করতে পারেনি পুলিশ। তবে যে ফ্ল্যাটটি থেকে রোগী শনাক্ত করা হয়েছে সেটি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বেইলিরোডের একটি ঠিকানা আইইডিসিআর থেকে দেওয়া হলেও ওই ঠিকানা খুঁজে পায়নি পুলিশ।রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাঈনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। বাড়িটি পুরোপুরি লকডাউন করা যায়নি। কারণ সেখানে অনেক বাসিন্দা রয়েছে।’
মতিঝিলে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা লকডাউন
অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখার এক কর্মকর্তা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় মতিঝিলের প্রিন্সিপাল শাখা লকডাউন করা হয়েছে। আগামী ১৪ দিন ওই শাখা লকডাউন থাকবে। ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শামসুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদাবরের লকডাউন এলাকা
আদাবরের ১৭ নম্বর সড়ক লকডাউন করেছে আদাবর থানা পুলিশ। ওই সড়কের একটি বাড়িতে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর আদাবরের সবগুলো সড়কেই চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করেছে পুলিশ। ঘিঞ্জি এলাকাটিতে পুলিশের তল্লাশি চৌকিও বসানো হয়েছে। অপ্রয়োজনে কেউ বের হলেই তাকে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) কাজী সাহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মানুষকে নিরুসাহিত করছি, যাতে বাসা থেকে কেউ বের না হয়।’
মোহাম্মদপুরের যেসব সড়ক লকডাউন
মোহাম্মদপুরের রাজিয়া সুলতানা রোডের একটি বাড়ি, তাজমহল রোডের একটি বাড়ি,কৃষি মার্কেট রোড এর মুখে একটি বাড়ি লকডাউন, বাবর রোডের একটি বাড়ি এবং বসিলার উত্তরমোড়া এলাকার একটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এসব এলাকার সড়ক প্রথমে লকডাউন করা হলেও পরবর্তীতে বাড়িগুলো লকডাউন করা হয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানার লকডাউন
যাত্রাবাড়ী থানার মীরহাজীবাগ এলাকার নবীনগর গলির একটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ওই বাড়িতে বেসরকারি একটি টেলিভিশনের একজন ক্যামেরা পারসন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা একটা বাড়ি লকডাউন করে রেখেছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাড়িটি লকডাউন থাকবে।’
শেরেবাংলা নগর এলাকায় বস্তি লকডাউন
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় মোতাহার বস্তি লকডাউন করেছে পুলিশ। আইইডিসিআর-এর নির্দেশে বস্তিটি লকডাউন করা হয়েছে। শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বস্তিতে একজন রোগী করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়াতে আইইডিসিআর-এর নির্দেশে বস্তিটি লকডাউন করা হয়েছে।
কলাবাগানের সেন্ট্রালরোডে ছয়তলা বাড়ি লকডাউন
সেন্ট্রালরোডের ছয়তলা একটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ্র জানান, আইইডিসিআর থেকে আমাদের তালিকা দেওয়ার পর আমরা ছয় তলা একটি বাড়ি লকডাউন করেছি। এখন পর্যন্ত এই এলাকাতে আর কোনও করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি।
শাহবাগের যেসব এলাকা লকডাউন করা হয়েছে
শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশের একটি বাড়িতে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছিল। লকডাউনের ১৪ দিন শেষ হবে আজ। ওই বাড়িতে আর কেউ আক্রান্ত হননি।
হাজারীবাগে আটতলা বাড়ি লকডাউন
হাজারীবাগ থানা এলাকার পশ্চিম ধানমন্ডির বেকারির গলির আটতলা একটি ভবনে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর ওই বাড়িটি লকডাউন করে দিয়েছে পুলিশ।
লালবাগ থানা দুটি সড়কে তিনটি বাড়ি লকডাউন
রাজধানীর লালবাগ থানা এলাকার লালবাগ সড়কে দুইটিবাড়ি এবং বড়বাট মসজিদ এলাকায় একটি ভবন লকডাউন করেছে পুলিশ।
চকবাজারের খাজে দেওয়ান লেন লকডাউন
পুরান ঢাকায় খাজে দেওয়ান লেনে একটি মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি ও এক নারীর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ায় ওই এলাকার অর্ধশতাধিক বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
চকবাজার থানার ওসি মওদুত হাওলাদার জানান, যে মসজিদ কমিটির সহসভাপতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি সমাজে চলাচল করেছেন তাই তার বাসার পাশের কয়েকটি বাড়ি এবং এক ও নম্বর দুই নম্বর গলি লকডাউন করা হয়েছে।
বংশালের মেরিনার্স টাওয়ার লকডাউন
পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার রোজ মেরিনার্স নামে একটি ভবন লকডাউন করা হয়েছে বলে জানান বংশাল থানার ওসি শাহীন ফকির।
তিনি জানান, রোজ মেরিনার্স একটি মার্কেট, কিন্তু ওই মার্কেটের ওপরে ৪০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ওই ফ্ল্যাটের ৫৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এজন্য ওই ভবনটি লকডাউন করা হয়েছে।
ওয়ারি এলাকায় দুটি ভবন লকডাউন
ওয়ারি থানা এলাকার বনোগ্রাম রোডের একটি ভবন এবং র্যাংকিং স্ট্রিট রোডে একটি ভবন লকডাউন করেছে পুলিশ। ওই ভবন দুটিতে কাউকে প্রবেশ করতে এবং বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
পল্টনে দুই ভবন লকডাউন
পুরানা পল্টন কালভার্ট রোডের দুটি ভবন লকডাউন করেছে পুলিশ। একটি ১৫ তলা ভবন অপরটি ছয়তলা ভবন। ভবনটির বাসিন্দাদের বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
শাহজাহানপুরে দীপশিখা রোড লকডাউন
রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার উত্তরশাহজাহানপুরের দীপশিখা রোডের চারতলা একটি বাড়িতে একজন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ওই বাড়িটি লকডাউন করে দিয়েছে পুলিশ।
শাহজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল হক বলেন, ‘আমরা আইইডিসিআর এর তালিকা অনুযায়ী চার তলা একটি বাড়ি লকডাউন করেছি। পাশাপাশি দীপশিখা সড়ক দিয়ে মানুষকে চলাচল করতে নিষেধ করা হয়েছে।’
বাড্ডায় দুই ভবন লকডাউন
মহানগরীর বাড্ডা থানার উত্তর বাড্ডা এলাকার দুটি বাড়িতে করোনাভাইরাস আক্রান্তরোগী মিলছে। এজন্য খানবাগ রোডের একটি বাড়ি এবং স্বাধীনতা সরণির একটি বাড়ি লকডাউন করেছে পুলিশ। প্রথমে দুটি সড়ক লকডাউন করা হলেও এখন তার বদলে দুটি বাড়ি লকডাউন করে রাখা হয়েছে।
সবুজবাগে একটি বাড়ি লকডাউন
রাজধানীর সবুজবাগের নন্দিপাড়ায় জিরো গলির একটি বাসায় ছয় ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সবাইকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই বাড়িটি লকডাউন করেছে পুলিশ।
সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভাটারায় পাঁচতলা ভবন লকডাউন
ভাটারা থানার বসুন্ধার আবাসিক এলাকার অ্যাপোলো হাসপাতাল সংলগ্ন পাঁচতলা একটি ভবন লকডাউন করেছে পুলিশ। বাড়িটিতে বাইরে থেকে কাউকে প্রবেশ না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। রোগী একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
উত্তরা যেসব এলাকা লকডাউন করে রাখা হয়েছে
উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের একটি সড়ক এলাকা লকডাউন করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণখানে একটি বাড়িতে এক যুবক আক্রান্তের খবর পাওয়া গেলেও তাকে সেই ঠিকানা অনুযায়ী পাওয়া যায়নি।
গুলশানে একটি বাড়ি লকডাউন
গুলশান ১ এর ১৫ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে করোনাভাইরাস রোগী পাওয়ার পর ওই সড়কটি এবং বাড়িটি লকডাউন করে দিয়েছে পুলিশ।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত একটি বাড়ি লকডাউন করেছি। এরপর আর নির্দেশনা আসেনি। সবাইকে সচেতনতায় পুলিশ কাজ করছে। অপ্রয়োজনে কাউকে বের না হওয়ার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালানো হয়।’
তেজগাঁওয়ে আররজতপাড়ায় বাড়ি লকডাউন
তেজাগাঁওয়ের আরজতপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে একজন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ওই বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে।
পল্লবী থানার তিন বাড়ি লকডাউন
পল্লবী থানার (মিরপুর ১১) সেকশন ১১ বি-এর ১ নম্বর সড়কের তিনটি বাড়ি লকডাউন করেছে পুলিশ। ৪৬, ৪৮ ও ৫০ নম্বর বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ৪৮ নম্বর ছয়তলা বাড়িটিতে একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী ছিলেন। রোগী শনাক্ত হওয়ার পর বাড়িটির দুইপাশের বাড়িসহ লকডাউন করে পুলিশ।
মিরপুর মডেল থানায় দুটি বাড়ি লকডাউন
মিরপুরের মডেল থানা দুটি বাড়ি লকডাউন করেছে। একটি পীরেরবাগ অপরটি শাহআলী বাগ। দুটি বাড়িতেই করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিজুর রহমান বলেন, ‘রোগী শনাক্ত হওয়ার পর আইইডিসিআর থেকে আমাদের বাড়ি দুটি লকডাউন করে দিয়েছে।
কাফরুল থানার দুটি বাসা লকডাউন
কাফরুল থানার মিরপুর ১৩ সেকশনের ১/১ রোডের ৪২ ও ৪৩ নম্বর বাসা লকডাউন করেছে পুলিশ। বর্তমানে ওই সড়ক পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে।
দারুস সালাম থানা এলাকায় লকডাউন
দারুস সালাম থানা এলাকার উত্তর টোলারবাগের একটি আবাসিট এলাকা পুরোটা লকডাউন করে রাখা হয়েছে। দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘সেখানে দুজন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর পুরো আবাসিক এলাকাটি লকডাউন করা হয়েছে। এখনও সেই অবস্থায় রয়েছে।’
শাহ আলীতে একটি বাড়ি লকডাউন
ডিএমপির শাহআলী থানার সি-ব্লকের ১১ নম্বর সড়কের একটি ছয়তলা বাড়ি লকডাউন করেছে পুলিশ। শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘বাড়িটিতে একজন রোগী করোনাভাইরাস পজিটিভ হয়েছে। তাই আমরা বাড়িটি লকডাউন করেছি। সড়কে মানুষ চলাচল সীমিত করার অনুরোধ করা হয়েছে।’
গেন্ডারিয়ায় চারতলা ভবন লকডাউন
রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার গুরুদাস লেনের চারতলা একটি ভবন লকডাউন করেছে পুলিশ। ওই ভবন থেকে একজন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
পুরান ঢাকার আরও যেসব এলাকায় লকডাউন করা হয়েছে
বাবুবাজারের একাংশ, উর্দুরোড, ইসলামপুর একাংশ, লক্ষ্মীবাজার ও সোয়ারিঘাটের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।