চুপচাপ থাকা মানেই শিশুটি অসামাজিক নয়
-লেখক: এম এ কে শাহিন চৌধুরী, শিশু সংগঠক, কাউন্সিলর, বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ
আমাদের সমাজে অন্তর্মুখী শিশুদের নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। খোদ বাবা মা তাঁর সন্তানকে
বুঝতে পারেনা। কারো সাথে মিশতে পারেনা বলে ‘অসামাজিক’ বলে কথা শুনতে হয়। অথচ আমাদের সমাজে
ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুীতা সম্পর্কে তেমন ধারণাই নেই।
ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী আচরণ একটি মানুষের বৈশিষ্ট্য। ইন্ট্রোভার্ট আর অসামাজিক বিষয় দুটি
এক নয়। একটি শিশু ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী হতে পারে। এটি মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য।
ব্যক্তিত্বের ধরনও বলা যেতে পারে। কেউ খুব মিশুক হয় কেউ সহজে মিশে না। এমনটা হতেই পারে৷
তাই অসামাজিক বলে বাচ্চাকে অসামাজিক তকমা দেয়া উচিত নয়।
অন্তর্মুখী শিশুর বিকাশে বাবা-মাকে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে তা হলো-
১. প্রতিটি শিশুই আলাদা বৈশিষ্ট ও ব্যক্তিত্ব নিয়ে বেড়ে ওঠে। তাই আপনার বাচ্চার স্বভাব বা
ব্যক্তিত্বকে সম্মান করুন, ছোট বা হেয় করবেন না।
২. ওদের সংবেদনশীল মনের উপর আঘাত পায় এমন কথা বলা, মজা বা ঠাট্টা করবেন না। এতে তারা
নিজেদেরকে আরও সংকুচিত করে ফেলতে পারে।
৩. তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে কোন কাজ করানো উচিত নয়। যেমন- খেলা করানো, অনেকের
সাথে মিশানোর চেষ্টা করা।
৪. দ্রুত না করে ধীরে ধীরে তাদেরকে শিখানোর চেষ্টা করুন।
৫. আদর বেশি করে করুন দেখবেন তাহলে মন খুলে কথা বলবে। কেননা এ ধরনের বাচ্চারা সহজে মন
খুলে কথা বলে না।
৬. অন্যের সাথে তুলনা করা একেবারেই অনুচিত।
৭. কম বন্ধু থাকা কোন দোষের নয়। অল্প বন্ধু নিয়েও ভালো থাকা যায়।
৮. ওর সাথে গল্প করুন, মনের অবস্থা বুঝার চেষ্টা করুন।
৯. এ ধরনের শিশুরা সৃজনশীল হয়। তাদের ভালো লাগার বিষয়ের আলোকে নার্সিং করতে পারলে ভালো
ফলাফল পাবেন।
১০. শিশুর ইন্ট্রোভার্টের বিষয়টি স্কুলে বলে রাখুন যাতে সে বুলিংয়ের শিকার না হয়।