গরমে শিশুর যত্ন নিবেন যেভাবে

দেশের একটি বিভাগ ছাড়া সব বিভাগেই বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। এরকম তাপদাহ আগামী তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর তাপদাহ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক। তিনি বলেন, আবহাওয়া নিয়ে সহসাই কোনো সুসংবাদ নেই। দেশের ওপর দিয়ে চলমান মৃদু ও মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এই তীব্র গরমে বড়রা যেমন কষ্ট পাচ্ছে সেই সাথে কষ্ট পাচ্ছে শিশুরা, বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই সময় শিশুদের আরো বেশি যত্ন নেয়া প্রয়োজন। এই গরমে শিশুর যত্নে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা প্রয়োজন :

খাদ্য
এই গরমে আপনার শিশুর খাবারের বিষয়ে খেয়াল রাখুন। সাধারণত হালকা, পুষ্টিকর ও সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়ান। এছাড়া নরম খাবার ও পানীয় ফল খাওয়াতে পারেন। এছাড়া যতটা সম্ভব বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন। গরমে শিশুকে বাইরের খাবার দিলে তা খারাপ পরিণতি বয়ে আনতে পারে। এছাড়া মাছ মাংস কম খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।

শিশুকে যথেষ্ট পরিমাণে ঠাণ্ডা পানি পান করান। তবে তা যেন ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি না হয়। কেননা এসময় বড়দের মতো শিশুরাও ঘামে। এতে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ঝরে যায়। এছাড়া ফলের জুস, ও রসালো ফল খাওয়াতে পারেন।

পোশাক
গরমে শিশুর প্রতি একটু বেশিই খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে তার একটু বাড়তি যত্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই শিশুর পোশাকের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। গরমে শিশুকে সাধারণত সুতির নরম ও পাতলা পোশাক পরাতে হবে। হাতাকাটা পোশাকও গরমে শিশুর জন্য বাছাই করতে পারেন। এছাড়া ডিসপোজেবল ন্যাপির পরিবর্তে সুতির পাতলা কাপড়ের ন্যাপি পরানো ভালো। কেননা ডিসপোজেবল ন্যাপিগুলো ঘাম ও তাপ শোষণ করতে পারে না তাই র‌্যাশ, ঘামাচি প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

নিয়মিত গোসল
গরমে শিশুদের স্বাস্থ ঠিক রাখার অন্যতম দিক হলো নিয়মিত গোসল করানো। তবে বেশি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে এবং খুব বেশি গোসল না করানো ভালো। কারণ এতে ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। গোসলের সময় শরীরের ভাজযুক্ত জায়গাগুলো ভালো করে পরিস্কার করে ধুয়ে দিতে হবে। গোসলের পানিতে হালকা করে ডেটলও দিতে পারেন।

গোসল একবার করালেও দিনে দুই তিনবার হালকা পানি দিয়ে শরীর পরিস্কার করে দিতে পারেন। এতে শিশুর শরীর পরিস্কার থাকবে।

চুলের যত্ন
যদি শিশুটি ৫-১০ বছর বয়সের হয় তাহলে এই গরমে মাথার চুল পুরো ফেলে দিতে পারেন। এছাড়া যদি পুরো চুল ফেলে দিতে না চান তাহলে অন্তত চুল একেবারে ছোট করে দিন। কারণ গরমে চুলের গোড়া ঘামে এবং এ থেকে খুশকি ও ঘামাচি বের হয়। চর্মরোগ হতে পারে।

বাসস্থান
গরমে শিশুকে ঠাণ্ডা রাখার জন্য ঘরে যেন প্রচুর আলো-বাতাস ঢুকতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। দম বন্ধ করা ঘরে রাখলে শিশু অসুস্থ হয়ে যাবে। তবে গরমে ঠাণ্ডার জন্য এসি ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি এসি একান্তই ব্যবহার করেন তাহলে তার স্পিড স্বাভাবিক রাখুন। এছাড়া বাড়ির আঙ্গিনায় বা সবুজ আঙ্গিনায় রাখতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন বেশি রোদ না লাগে। বাইরের গরমে শিশুকে যতোটা সম্ভব কম বের করুন।

প্রসাধনী
গরমে শিশুকে বিভিন্ন প্রসাধনীর ব্যবহার বন্ধ রাখুন। গোসলের পর তেল ও লোশন দেওয়াও বন্ধ করুন। শিশুকে গোসল করানোর পর শরীর শুকিয়ে আসলে গলা, পায়ের ভাঁজে ইত্যাদিতে পাউডার ব্যবহার করুন। এতে ঘামাচি ওঠা রোধ করবে ও শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে।

স্বাস্থ্য
গরমে শিশুর স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মশার কয়েল ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। ঘর-বাড়ি পরিস্কার রাখুন। সবধরনের খেয়াল রাখার পরও কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *