করোনায় শিশুদের শরীরে যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে

দেশে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হচ্ছেন। সেইসঙ্গে মৃত্যুর মিছিলও বেড়েই চলেছে। এ সময় বড়দেরও যেমন করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় সচেতন থাকা জরুরি; ঠিক তেমনই শিশুদের জন্যও সুরক্ষা বলয় তৈরি করতে হবে।

করোনায় দ্বিতীয় ঢেউয়ে শিশুরাও নিরাপদ নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ সময় শিশুদের প্রতিও নিতে হবে বাড়তি যত্ন ও সুরক্ষা। গত বছর করোনা শিশুদের শরীরে তেমন আঘাত হানেনি। তবে কোভিডের নতুন ঢেউ থেকে নিস্তার পাচ্ছে না শিশুরাও।

শিশুদের মধ্যেও এখন দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। ভাইরাসটির নতুন রূপটি ৮-১৪ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ভারতের বেশ কয়েকটি স্থান যেমন- দিল্লি, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা এবং কর্ণাটকে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা নেহাৎই কম নয়।

হার্ভার্ড হেলথের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর প্রভাবে শিশুদের শরীরের প্রকাশ পাওয়া উপসর্গগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হতে পারে। করোনাভাইরাসের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে জ্বর, মাথা ব্যথা, কাশি এবং সর্দি এগুলো সব শিশুদের শরীরে প্রকাশ নাও পেতে পারে।

যদি কোনো শিশু জ্বরে আক্রান্ত হয়েও থাকে; তা ১০৩-১০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। যদি জ্বর ৪-৫ দিন অব্যাহত থাকে, তবে অবশ্যই এটিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।

অভিভাবকের উচিত শিশুর রক্তচাপের স্তরটি পর্যবেক্ষণ করা। একটি অক্সিমিটারের সাহায্যে শরীরের অক্সিজেনের পরিমাণ জানুন। অক্সিজেনের পরিমাণ কমে আসলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, সাধারণ লক্ষণগুলো বাদেও শিশুদের শরীরে আলাদা লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। টানা কয়েকদিন ধরে সর্দি-কাশির মাধ্যমে ভাইরাসটি শিশুদের ফুসফুসকে প্রভাবিত করতে পারে। যার ফলে শিশুর শরীরে নিউমোনিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে।

এমনকি নাক বন্ধভাব, মুখ দিয়ে লালা পড়া, ঠোঁট বা মুখ ফাটা এবং ঠোঁটে নীলচে আভা, বিরক্তি, নিদ্রাহীনতা এবং ক্ষুধা কমে যাওয়া এগুলো করোনার লক্ষণ হতে পারে। তাই এ সময় যদি শিশুর শরীরে এসব লক্ষণ প্রকাশ পায় তাহলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

শিশুদের সংক্রমণ রোধে এজন্য আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। যদিও শিশুদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা কঠিন। তবে তাদের নিরাপদ রাখার একমাত্র বিকল্প হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলানো। আপনার সন্তানের সুরক্ষার জন্য এ সময় যা যা করণীয়-

>> যে শিশুরা এখনও বুকের দুধের উপর নির্ভরশীল; তাদের মায়েদেরকে সাবধান হতে হবে। মাস্ক পরা এবং ঘন ঘন স্যানিটাইজ ব্যবহার করতে হবে।

>> শিশুদের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা এবং হাত ধোয়া বাধ্যতামূলক।

>> মাস্ক পরা আবশ্যক। তবে দু’বছরের ছোট শিশুকে মাস্ক পরানো সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে বাবা-মায়েদেরই সারাক্ষণ মাস্ক পরতে হবে।

>> শিশু মাস্ক না পরলে, তাদেরকে বুঝিয়ে মাস্ক পরাতে হবে।

>> বাবা-মা বা বাড়ির অন্য কারও যদি কোনো উপসর্গ দেখা যায়; তাহলে টেস্ট করিয়ে নিন। উপসর্গ দেখা গেলেই বাচ্চাকে যতটা সম্ভব দূরে রাখুন।

>> স্কুল যেহেতু বন্ধ তাই শিশুদের নিয়ে বাইরে বের না হওয়ায় ভালো। তাদের বাড়িতেই নানা রকম কাজে-খেলায় ভুলিয়ে ব্যস্ত রাখতে হবে।

>> শিশুদের ডায়েটে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, ডি, ক্যালসিয়াম এবং দস্তা জাতীয় অনাক্রম্যতা-জোরদার পুষ্টি রয়েছে তা নিশ্চিত করুন।

>> প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাতে হবে শিশুকে। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তোলাও অভিভাবকের দায়িত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Warning: Undefined array key 0 in /home/freevec2/bdchild24.com/wp-content/plugins/cardoza-facebook-like-box/cardoza_facebook_like_box.php on line 924