কবে চালু হবে উত্তরবঙ্গের প্রথম পূর্ণাঙ্গ সরকারি শিশু হাসপাতাল?

উত্তরবঙ্গের প্রথম পূর্ণাঙ্গ সরকারি শিশু হাসপাতাল স্থাপনের জন্য ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে দেড় বছরেরও বেশি সময় আগে। ভবন নির্মাণের জন্য দুই বছরের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও নির্ধারিত সময়ের আড়াই মাস আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শেষে শিশু হাসপাতাল ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা সিভিল সার্জনকে হস্তান্তর করা হয় একই মাসে। সবকিছু ঠিক থাকলে গত বছরের প্রথম দিকেই শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে থেমে যায় সব কার্যক্রম।

২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে নবনির্মিত ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতালটিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু হয়। প্রায় দেড় বছর ধরে সেখানে চলছে করোনা রোগীদের চিকিৎসা। দীর্ঘদিনেও শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম চালু না হওয়ায় করোনা রোগীদের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা চালু করে শিশুদের জন্য নির্মিত ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালটিতে কার্যক্রম শুরুর দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।

মূল হাসপাতাল ভবনের প্রথম তলায় থাকবে ইমার্জেন্সি, আউটডোর, চিকিৎসকদের চেম্বার এবং ল্যাব। দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটার, ব্রোন ইউনিট এবং তৃতীয় তলায় ওয়ার্ড এবং কেবিন থাকবে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ জন করে শিশু নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। বছরের অন্যান্য সময়েও শিশু রোগীদের চাপ থাকে এ হাসপাতালে।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, শিশুদের জন্য আলাদা বিশেষায়িত হাসপাতাল হলে এ অঞ্চলের মানুষ অনেক বেশি উপকৃত হবেন। কেননা বেসরকারি হাসপাতালে অনেকের চিকিৎসা ব্যয় বহনের সামর্থ্য থাকে না।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এস এম নূরুন নবী জাগো নিউজকে বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে একটিমাত্র শিশু বিভাগ দিয়ে এ অঞ্চলের চিকিৎসাপ্রত্যাশী শিশুদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হলে শিশুদের জটিল সার্জারি ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা স্বল্পমূল্যে দেওয়া সম্ভব হবে।

রংপুর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব এবং জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বলেন, ১০০ শয্যার ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালে বর্তমানে রোগী নেই বললেই চলে। করোনা আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হারও অনেক কমে গেছে। তাই এ পরিস্থিতিতে ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালের কার্যক্রম রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবনির্মিত আইসোলেশন ভবনে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

রংপুর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ায় ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালের কার্যক্রম রমেক হাসপাতালের নবনির্মিত আইসোলেশন ভবনে নেওয়ার জন্য জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। এখন অনুমোদনের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, করোনা আইসোলেশন হাসপাতালের কার্যক্রম সরানোর পর শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *